সরকারি টাকায় তৈরি কটেজ চালু হবে কবে, উঠছে প্রশ্ন

১২ কোটি টাকা খরচ করে সাগরে তৈরি হয়েছিল পর্যটকদের জন্য কটেজ। গঙ্গাসাগরে সেই ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ২০টি কটেজ এখন অযত্নে পড়ে রয়েছে। উদ্বোধন হয়ে যাওয়ার পরে বছরখানেক কেটে গেলেও সেগুলি সাধারণ তীর্থযাত্রী বা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

সাগর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৯
Share:

কবে থাকতে শুরু করবেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র।

১২ কোটি টাকা খরচ করে সাগরে তৈরি হয়েছিল পর্যটকদের জন্য কটেজ। গঙ্গাসাগরে সেই ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ২০টি কটেজ এখন অযত্নে পড়ে রয়েছে। উদ্বোধন হয়ে যাওয়ার পরে বছরখানেক কেটে গেলেও সেগুলি সাধারণ তীর্থযাত্রী বা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি। পর্যটন দফতরের ওই কটেজগুলি পরিচালনা করার ভার কার হাতে দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত না হওয়াতেই এমন সমস্যা, প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে এ কথা।

Advertisement

এমনিতেই গঙ্গাসাগরে ভাল আবাসিক হোটেলের অভাব রয়েছে। সম্প্রতি একটি হোটেল নিজেদের দায়িত্বে নিয়ে চালাচ্ছে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। গঙ্গাসাগরে আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা ছাড়া হোটেল বলতে সেই একটিই। সেই অভাব পূরণ করতেই ওই অতিথিশালা গড়ার সরকারি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। তা তৈরিও হয়ে গিয়েছে।

প্রশাসন এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ থেকে কাজ শুরু হয়েছিল ওই কজেটগুলির। ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে সেগুলি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরে গিয়ে সেগুলি উদ্বোধন করেছেন ২০১৫ সালের মাঝামাঝি নাগাদ।

Advertisement

ওই চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, কপিল মুনির আশ্রমের খানিকটা পিছনেই ওই কজেটগুলির প্রাঙ্গণে কিছু ভবঘুরে আর গরু-ছাগল চড়ে বেড়াচ্ছে। ঘরের অন্দরসজ্জাও অযত্নে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ফুটিফাটা হয়ে রয়েছে মূল পিচরাস্তা থেকে কটেজে যাওয়ার ইটের পথ। পরিচর্যার অভাবে রং উঠতে শুরু করেছে ঘরের দেওয়ালে। স্যাঁতস্যাতে ভাব।

কেন চালু হচ্ছে না কটেজ?

সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘আসলে ওই কটেজগুলি পর্যটন দফতরের হাতে রয়েছে। তারা সেগুলি কাদের পরিচালনার দায়িত্ব দেবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে আশা করছি, দ্রুত সেগুলি চালু হয়ে যাবে।’’ পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, ওই কটেজগুলি ইসকনের সঙ্গে যৌথ ভাবে চালাতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। কয়েক মাস আগেই ইসকনের একটি দল এসে কটেজগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখে গিয়েছে বলেও ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে ইসকনের সঙ্গে কথা চলছে। বিবেচনার স্তরে আছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’

যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের তা নিয়েও ক্ষোভ আছে। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় কোনও সংস্থাকে দিয়েই কটেজ চালানো হোক।

গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের প্রধান তথা এলাকার তৃণমূল নেতা হরিপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার অন্যতম দু’টি পর্যটনকেন্দ্র গঙ্গাসাগর এবং বকখালির উন্নয়নে আলাদা করে পর্ষদ গড়েছে সরকার। তাদের হাতে এগুলি চালানোর ভার না দিয়ে অন্যদের হাতে দিলে তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।’’

এ দিকে, সরকারি সিদ্ধান্তে গড়িমসির জন্য ভুগতে হচ্ছে পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীদের। গুজরাতের অহমেদাবাদ থেকে স্ত্রীকে নিয়ে গঙ্গাসাগর বেড়াতে এসেছিলেন মণীশ জুঠানি। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেছিলাম, গঙ্গাসার আগের চেয়ে অনেকটাই ভাল হয়েছে। মন্দির এলাকায় অনেকটাই সাজানো হয়েছে। কিন্তু হোটেল বলতে একটাই। সেটা পছন্দ না হওয়ায়, আমরা একটি আশ্রমে থেকে গিয়েছিলাম।’’ তাঁদের দাবি, আরও কিছু থাকার ব্যবস্থা সরকারি তরফে অবশ্যই তৈরি হওয়া উচিত এখানে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement