জাতীয় পুরস্কার পেল সুবিধা পোর্টাল। —নিজস্ব চিত্র।
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোল দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল ব্যবস্থাকে সাশ্রয়ী এবং স্বচ্ছ করতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছিল ‘সুবিধা’ নামে একটি পোর্টাল। রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স দফতরের তৈরি সেই পোর্টাল এ বার জিতে নিল জাতীয় পুরস্কার।
২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে কাজ শুরু হয়েছিল পোর্টালের মাধ্যমে। পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ই-গভর্নেন্স স্কিম ২০২৩-এর জন্য জাতীয় পুরস্কারের ক্যাটাগরি ১-এ ‘সুবিধা’ ব্যবস্থাকে ‘গোল্ড অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে আয়োজিত ২৬ ন্যাশন্যাল ই-গভর্নেন্স কনফারেন্সে ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পেট্রাপোল বন্দরের ম্যানেজার কমলেশ সাইনির হাতে শংসাপত্র ও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়।
কমলেশ বলেন, “পোর্টালের মাধ্যমে কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রফতানির জন্য আসা পণ্যভর্তি ট্রাক চলাচল সাশ্রয়ী এবং স্বচ্ছ হয়েছে। এই পোর্টাল চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে এখানে সিন্ডিকেট ব্যবস্থা চালু ছিল। সেই সিন্ডিকেট এখন আর নেই। আগে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্যভর্তি ট্রাক বনগাঁয় এসে পেট্রাপোল বন্দরে পৌঁছতে ৩০-৪০ দিন অপেক্ষা করতে হত। এখন আর তা করতে হয় না। একই দিনে ছাড়পত্র মেলে।” ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রফতানির জন্য আসা ট্রাক প্রথমে বনগাঁ শহরে আসত। পুরসভার পার্কিংয়ে গাড়ি রেখে পেট্রাপোলে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট দিনের অপেক্ষা করতে হত। পুরসভার পার্কিংয়ে ট্রাক দাড়ানোর জায়গা পাওয়া না গেলে বেসরকারি পার্কিং বা সড়কের উপরে দীর্ঘ দিন ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকত। অতিরিক্ত টাকা গুণতে হত রফতানিকারীদের। এখন দেশের যে কোনও জায়গা থেকে পোর্টালের মাধ্যমে ট্রাকের অনলাইন বুকিং করা যায়। নির্দিষ্ট দিনে ট্রাকে পণ্য বোঝাই করে সরাসরি বন্দরে চলে যাওয়া যায়।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “পোর্টাল চালু হওয়ায় রফতানিকারীরা খুবই উপকৃত হয়েছেন। ট্রাক নিয়ে এসে আর রাস্তার উপরে বা বেসরকারি পার্কিংয়ে দাঁড় করাতে হয় না।” পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, “রফতানিকারী হিসেবে সত্যিই আমরা উপকৃত। আর অতিরিক্ত অপেক্ষা করতে হয় না। সরাসরি বন্দরে ট্রাক চলে আসছে।”