ট্রলারের সারি। নিজস্ব চিত্র।
মাছ ধরার মরসুমে সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের জালে খুব কম সংখ্যায় ইলিশ উঠেছিল। যার জেরে বড়সড় লোকসানের মুখোমুখি ট্রলার মালিক থেকে মৎস্যজীবীরা। লোকসানের ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। এই লোকসান মিটিয়ে সামনের বছর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য ট্রলার নামানো যাবে কিনা, তা নিয়েও সংশয়ে ট্রলার মালিকরা।
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, ২০১৮-য় জেলার বিভিন্ন জায়গায় মৎস্যজীবীদের জালে ওঠা ইলিশের পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। পরের বছর সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় ১৯ হাজার মেট্রিক টনে। কিন্তু এ বারে সব মিলিয়ে মাত্র ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উঠেছে জালে। ছোট বড় সব মিলিয়ে জেলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়।
মৎস্যজীবীরা ভেবেছিলেন, লকডাউনের ফলে এবছর সমুদ্রে দূষণের মাত্রা অনেকটাই কমেছে। মরসুমের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গের উপকূল জুড়ে হালকা বৃষ্টির সঙ্গে পূবালি হাওয়া থাকায় ট্রলারে প্রচুর ইলিশ ওঠার সম্ভাবনা ছিল। সেই আশাতেই সমুদ্রে রওনা দেয় মৎস্যজীবী ট্রলারগুলি। কিন্তু মাঝসমুদ্রে ঢেউয়ের দাপট এবং প্রতিনিয়ত আবহাওয়া খারাপ হতে থাকায় প্রত্যেকটি ট্রিপে মাত্র কয়েক দিন মাছ ধরে ফিরে আসতে হয় ট্রলারগুলিকে।
ট্রলার মালিকদের কথায়, একটি ট্রলার মাছ ধরার জন্য সমুদ্রে নামাতে খরচ হয় ১৬ থেকে ১৮ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। যে সব মৎস্যজীবী মাছ ধরতে যান, তাঁদেরকে আগাম টাকা দিতে হয়। চড়া সুদে ঋণ নিতেও হয় ট্রলার মালিকদের। সঙ্গে জ্বালানির দাম পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকায় খরচ ক্রমশ বাড়ছে। এ বিষয়ে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেছেন, ‘‘প্রতিনিয়ত ট্রলারের খরচ বাড়ছে। তার উপর এ বার খুব কম পরিমাণ ইলিশ উঠেছে জালে। লাভ তো হয়ইনি, উল্টে কী ভাবে লোকসান মেটাতে পারব জানি না। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কাছে ট্রলারের জন্য ডিজেলের সাবসিডি চাওয়া হয়েছে। সরকার আমাদের আবেদনে সাড়া না দিলে আগামী দিনে কী ভাবে সমুদ্রে ট্রলার নামাব, তা নিয়ে ভাবতে হবে।’’