সুষ্ঠু মেলার জন্য পরিস্থিতি দেখতে গঙ্গাসাগরে জেলাশাসক

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে গঙ্গাসাগর মেলায় বেশ কিছু ঘাটতি প্রশাসনের নজরে আসে। এ বার যাতে সেই সব সমস্যাগুলো কাটিয়ে সুষ্ঠু ভাবে আগামী গঙ্গাসাগর মেলা সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে সচেষ্ট হয়েছেন জেলাশাসক।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড় শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৭
Share:

পরিদর্শন: গঙ্গাসাগরে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

সুষ্ঠু গঙ্গাসাগর মেলা পুণ্যার্থীদের উপহার দিতে আগাম প্রস্তুতি শুরু করে দিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। ২০২০ সালের গঙ্গাসাগর মেলায় যাতে কোনও খামতি না থাকে সে জন্য আগে থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন জেলাশাসক পি উলগানাথন।

Advertisement

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার গঙ্গাসাগর যান জেলাশাসক। রবিবার সকাল থেকে তিনি গঙ্গাসাগর মেলা কমিটির অফিসে বসে দফায় দফায় সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা, পূর্ত দফতর, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, ড্রেজিং কর্পোরেশন, জাতীয় সড়ক বিভাগ-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি মেলা প্রাঙ্গণ ছাড়াও লট-৮, কচুবেড়িয়া, চেমাগুড়ি, টেম্পল রোড-সহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন। তা ছাড়াও বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ড এবং গাড়ি পার্কিং করার জায়গাগুলিও ঘুরে দেখেন। গঙ্গাসাগর মন্দিরে গিয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার খোঁজখবর নেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে গঙ্গাসাগর মেলায় বেশ কিছু ঘাটতি প্রশাসনের নজরে আসে। এ বার যাতে সেই সব সমস্যাগুলো কাটিয়ে সুষ্ঠু ভাবে আগামী গঙ্গাসাগর মেলা সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে সচেষ্ট হয়েছেন জেলাশাসক। এ দিন জেলা প্রশাসকের সামনে গতবারের গঙ্গাসাগর মেলায় যে সমস্ত সমস্যাগুলি দেখা দিয়েছিল তা তুলে ধরেন বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা।

Advertisement

তাঁরা জানান, গতবার গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে যে সমস্ত অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি করা হয়েছিল তা একদিন ব্যবহার করার পরই আর কোনও পুণ্যার্থী দ্বিতীয় দিন ব্যবহার করতে পারেননি। প্রতিবারই পরিবেশ দূষণ নিয়ে প্রশাসনের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিবারই দেখা যায় মুড়িগঙ্গায় ঠিকমতো ড্রেজিং না হওয়ার কারণে ভাটার সময় প্রচুর ভেসেল আটকে থাকে কাকদ্বীপ থেকে কচুবেড়িয়ার জলপথে। এ বার যাতে সেই সমস্যা না হয় সে জন্য আগে থেকেই মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন এ বার গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৫০০ স্থায়ী শৌচাগার তৈরি করার জন্য জায়গা চিহ্নিতকরণ করে কাজ শুরু করার কথা ভেবেছে। নদীপথে চলাচল করা ভেসেল-সহ সমস্ত বিষয়ের উপর নজরদারি চালানোর জন্য বেশ কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার (নজর মিনার) তৈরি করার কথা ভাবা হয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলায় এসে প্রতিবারই বহু পুণ্যার্থী ভিড়ের কারণে হারিয়ে যান। সেই কারণে হ্যাম রেডিওকে আরও বেশি করে কাজে লাগানোর জন্য একটি রেডিও স্টেশন তৈরি করার কথাও এ বার ভাবা হচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিবারই দেখা যায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের সমস্যা। মোবাইল সংযোগের সমস্যা দূর করতে বিভিন্ন মোবাইল সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা মেলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জেলাশাসককে জানান। মেলার সৌন্দর্যায়ন কী ভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব তা নিয়েও আলাপ আলোচনা হয়েছে বলে বিধায়ক জানান।

জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে বেশ কিছু সমস্যার কথা বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা আমাকে জানিয়েছেন। আমি সমস্ত পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছি। এ বার মেলা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement