বিক্ষোভ: মথুরাপুরে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ। ছবি: দিলীপ নস্কর
খাবারের দাবিতে একজোট হয়ে থালা-বাটি হাতে বিক্ষোভ দেখালেন মথুরাপুরের রাধাকান্তপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। বুধবার সকালে মথুরাপুর-ঘোড়াদল রোডের রাধাকান্তপুর মোড়ে প্রায় ঘণ্টা তিনেক টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, মথুরাপুর ১ ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের রাধাকান্তপুর, সুধীরহাট, পানাপুকুর, দক্ষিণ রামনগর, কালীতলা, চাঁদপাশা গ্রামের বাসিন্দারা অধিকাংশই দিনমজুরির কাজ করেন। কিন্তু টানা লকডাউনের জেরে কাজকর্ম সব শিকেয় উঠেছে। এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে রেশনে ২ কিলো চাল ও আটা দিয়েছিল। এই ক’দিনে তা-ও শেষ। বর্তমানে কোনওরকমে একবেলা খেয়ে দিন কাটছে। শিশুরা খাবার না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এই অবস্থায় সরকারি সাহায্যও মিলছে না বলে অভিযোগ। আন্দোলনকারী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, মেহেবুব খান, কার্তিক হালদারদের দাবি, বাড়িতে খাবার বলতে কিছুই নেই। খিদেয় ছোটরা কান্নাকাটি করছে। প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
মথুরাপুর ১ বিডিও জামিল আখতার বলেন, ‘‘ওই এলাকায় যে সমস্ত বাসিন্দাদের খাবারের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করার জন্য পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রামের রেশন ব্যবস্থা মাধ্যমে সকলে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন কিনা, সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।’’
অন্য দিকে, পানীয় জলের দাবিতে বাসন্তী রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তীর চোরাডাকাতিয়া মোড়ে। প্রায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, চোরাডাকাতিয়া গ্রামে তিনটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই একটি খারাপ। দিন পনেরো আগে পূর্ণিমার কোটালে মাতলা নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার ফলে বাকি দু’টিও খারাপ হয়ে গিয়েছে। ফলে গত দু’সপ্তাহ ধরে পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছেন এলাকার মানুষ। অনেক দূর থেকে জল আনতে হচ্ছে। এ দদিকে, করোনা-আতঙ্কে অন্য গ্রাম থেকে পানীয় জল আনতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে বাসন্তী ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি বাসি বাসিন্দাদের।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন সকাল থেকে কলসি, বালতি নিয়ে বাসন্তী রাজ্য অবরোধে নামেন স্থানীয় মানুষ। এলাকার বাসিন্দা রমিলা শেখ, স্বপন জানা, শেফালি সর্দাররা বলেন, ‘‘পনেরো দিন ধরে আমরা পানীয় জলের সমস্যায় রয়েছি। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিডিও অফিস থেকে শুরু করে সর্বত্র জানিয়েছি। সুরাহা হয়নি।’’ ব্লক প্রশাসনের তরফে দ্রুত নলকূপ সারানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)