প্রতীকী ছবি।
বকেয়া বেতনের দাবিতে আগুন জ্বলছিল চটকলে। পোড়ানো হয়েছিল জুট মিলের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারের গাড়ি। হামলা হয়েছিল আধিকারিকদের আবাসনে। তার পর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন মাস। শ্রমিকদের সঙ্গে পুরনো ঝামেলা মিটিয়ে সোমবার ফের নতুন করে খুলল শ্যামনগরের উইভারলি জুট মিল। সরকারি অনুমোদন নিয়ে আপাতত ১৫০ কর্মী দিয়ে উৎপাদন শুরু হয়েছে। সরকার অনুমতি দিলে সব কর্মীদের তিনটি শিফটে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছে চটকল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের সমস্ত বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিল উইভারলি চটকলটি। সেই জন্য গত জানুয়ারিতে আচমকা সাসপেনশন এফ ওয়ার্ক নোটিস ঝুলিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় মিল। কর্মহীন হয়ে পড়েন ২২৫০ শ্রমিক। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে চালু হয় মিলটি। আলোচনায় ঠিক হয়েছিল, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মেটানো হবে। কারখানার যন্ত্রপাতির মেরামতির কাজও হবে। শ্রমিকদের অভিযোগ, তা না করেই মিল চালু করার চেষ্টা করা হয়। এমনকী কাঁচামালের জোগানও ছিল না। ২০ ফেব্রুয়ারি সাত সকালে চটকলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক বিক্ষোভ। শ্রমিকদের একাংশ মিলের ভিতরে ঢুকে পড়ে। হামলা হয় আধিকারিকদের আবাসনে। যথেচ্ছ ভাঙচুর হয়ে সেখানে। চটকলের সিইও অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি-সহ মট দুটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনার পরেই চটকল কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্কের দিকে আঙুল তোলে। জানানো হয়, ঋণদানের পদ্ধতি ক্রমশ জটিল করে তোলা হচ্ছে। তার ফলে প্রাপ্য ঋণ মিলছে না। কারখানা চালাতে অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের। অর্ঘ্য জানান, সমস্ত জটিলতা মিটিয়ে তাঁরা শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানা চালুর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই তাঁরা মিল চালুর জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। অনুমতি মিলতেই মিল চালু করা হল।
সরকারি নির্দেশ মেনে, শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই ১৫০ শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে কাজ দেওয়া হবে। অর্ঘ্য জানান, সমস্তরকম সুরক্ষা বিধি মেনেই মিল চালু করা হল। আপাতত সকালের শিফটে কাজ হবে। পরে অনুমতি মিললে বাকি শিফটে কাজ শুরু হবে। এ দিন থার্মাল গান দিয়ে শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়ে। শ্রমিকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার এবং মাস্ক দেওয়া হয়েছে। মানা হয়েছে দূরত্ববিধিও। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মেটানোর পাশাপাশি প্রভিডেন্ড ফান্ড থেকে শ্রমিকদের পাঁচ হাজার টাকা করে ঋণও দেওয়া হয়েছে।