বনগাঁ মহিলা পুলিশ স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
ছেলেধরা সন্দেহে গুজব রটেছে নানা প্রান্তে। নিছকই সন্দেহের বশে উত্তর ২৪ পরগনার নানা প্রান্তে প্রহৃত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। গত কয়েক দিন ধরে গুজব বন্ধে সক্রিয় পুলিশ। চলছে প্রচার, ধরপাকড়ও। এই পরিস্থিতিতে পর পর দু’টি ঘটনায় সচেতনতার পরিচয় দিলেন বনগাঁর গ্রামের মানুষ।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বনগাঁ থানার মণিগ্রাম এলাকায় অচেনা এক ব্যক্তিকে দেখে গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা নাম-পরিচয় জানতে চান। কিন্তু ওই ব্যক্তি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। গ্রামবাসীরা তাঁকে মারধর না করে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে হোমে পাঠানো হচ্ছে। পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
অন্য একটি ঘটনায়, শুক্রবার দুপুরে এক যুবককে বনগাঁ থানার গাঁড়াপোতা এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন গ্রামবাসীরা। কথাবার্তা অসংলগ্ন বলে বুঝতে পারেন গ্রামের মানুষ। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করেছে। এই যুবকও মানসিক ভাবে অসুস্থ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পর পর দু’টি ঘটনায় মানুষ আইন হাতে তুলে না নেওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পুলিশ কর্তারা। বনগাঁ থানার আইসি শিবু ঘোষের মতে, পুলিশের প্রচারে মানুষ সাড়া দিচ্ছেন। সন্দেহের বশে মারধর করার প্রবণতা কমছে। মানুষের ভরসা বাড়ছে আইনের প্রতি।
গত কয়েক দিনে বনগাঁ মহকুমা জুড়ে একের পর এক ছেলেধরা গুজবে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বনগাঁর ঠাকুরপল্লি, গাইঘাটার বেড়ি গোপালপুর, গোপালনগরের চারাতলা এবং পেট্রাপোল থানার হরিদাসপুর এলাকায় একই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বনগাঁর ঘটনায় ৬ জনকে এবং গাইঘাটার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ এক জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি, বনগাঁ মহকুমার প্রতিটি থানা এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে।
পুলিশের দাবি, বনগাঁ পুলিশ জেলায় শিশু চুরি বা অপহরণের কোনও ঘটনা আদৌ ঘটেনি গত কয়েক দিনের মধ্যে। গোটাটাই গুজব। মানুষের কাছে আবেদন জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সন্দেহজনক কাউকে দেখলে পুলিশকে খবর দিন। আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়াবেন না। পুলিশের পক্ষ থেকে থানার আধিকারিকদের ফোন নম্বরও বিলি করা হয়েছে। পুলিশ কর্তারা মনে করছেন, শিশু চুরির গুজব সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই বেশি করে ছড়িয়ে পড়েছিল। সে কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় উপরে নজরদারি চালানো হচ্ছে।