তৃণমূলের অফিসে ভাঙচুর, হাসনাবাদে অভিযুক্ত সিপিএম

ভাঙা কোমর নিয়েও কি তবে লড়ে যাচ্ছে সিপিএম! জমির দখলকে কেন্দ্র করে হাসনাবাদের গ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষের মধ্যে বোমা-গুলির লড়াই চলেছে দীর্ঘক্ষণ ধরে।

Advertisement

নির্মল বসু

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

নজরদারি: সংঘর্ষের পর গ্রামে পুলিশি টহল। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা কোমর নিয়েও কি তবে লড়ে যাচ্ছে সিপিএম!

Advertisement

জমির দখলকে কেন্দ্র করে হাসনাবাদের গ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষের মধ্যে বোমা-গুলির লড়াই চলেছে দীর্ঘক্ষণ ধরে। সিপিএম প্রভাবিত একটি ক্লাবঘরও ভাঙা হয়েছে। ভাঙচুর হয়েছে দু’টি বাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের জনা পনেরো জখম হয়েছে। ৪ জনকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে।

মঙ্গলবার ঘটনাস্থল হাসনাবাদের মুরারিশা পঞ্চায়েতের সদরপুর গ্রাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আশেপাশের তিনটি থানার ওসিরা বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। আসেন বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত। গ্রামে র‍্যাফের টহল চলছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, এই সব ভেড়ি এলাকার দখল এক সময়ে পুরোপুরি সিপিএমের হাতেই ছিল। রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরেও হাসনাবাদের এই এলাকায় কিছু ক্ষমতা থেকে গিয়েছে বামেদের হাতে। যে কারণে, এর আগেও শাসক দলের সঙ্গে তাদের সঙ্ঘাত বেধেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসনাবাদের সদরপুর গ্রামে দু’কাঠা জমিতে মাছ চাষ করতেন সিপিএমের সুনীল সর্দার। ওই জমি নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিবাদ। তৃণমূলের দাবি, সিপিএমের আমলে জোর করে দখল করা হয়েছিল ওই খাস জমি। শাসক দলের দাবি, জমির প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সেখানে পার্টি অফিস করেছে তারা। বাঁশ ও চটার বেড়ার সেই অফিসই সোমবার উদ্বোধন হয়েছিল। পত পত করে সেখানে উড়ছিল ঘাসফুল পতাকা। আর তা নিয়েই ওই দিন উত্তেজনা ছড়ায় দু’পক্ষের মধ্যে।

ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ সিপিএম বহিরাগতদের এনে দা-কুড়ুল দিয়ে তৃণমূলের নতুন পার্টি অফিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। গ্রামের আরও একটি পুরনো তৃণূলের কার্যালয়ে ঢুকেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।

বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ তৃণমূলও বহিরাগতদের এনে গ্রামে গোলমাল পাকায় বলে পাল্টা অভিযোগ। শুরু হয় গুলি-বোমার লড়াই। সুনীল সর্দারের বাড়িতে ভাঙচুর চলে। সিপিএম প্রভাবিত একটি ক্লাব ঘরও ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

তৃণমূল নেতা এটিএম আব্দুল্লা রনি জখমদের দেখতে গিয়েছিলেন বসিরহাট হাসপাতালে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এলাকায় অশান্তি বাধাতে বিজেপির হয়ে এখন দায়িত্ব নিয়েছে সিপিএম। যারাই জড়িত, যাতে গ্রেফতার হয়, তা দেখতে বলা হয়েছে পুলিশকে।’’ গোলমালের পিছনে স্থানীয় সিপিএম বিধায়কের হাত আছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শক্তি মুখোপাধ্যায়ের আবার দাবি, ‘‘আমাদের এক কর্মী খাস জমিতে মাছের ব্যবসা করতেন। ওই জমি দখল করে তাঁকে উচ্ছেদ করতে এসে তৃণমূলের লোকজন সিপিএম প্রভাবিত ওই ক্লাবে ভাঙচুর করেছে। বাধা দিলে আমাদের সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement