তছনছ বহু কিছু। ছবি: দিলীপ নস্কর।
রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নার্সিংহোমে ভাঙচুর, লুটপাঠ চালানোর অভিযোগ উঠল মৃতের আত্মীয়-পরিজনদের বিরুদ্ধে। বাধা দিয়ে গিয়ে হামলাকারীদের মারে জখম হয়েছেন ৪ পুলিশ কর্মীও। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ফলতার একটি নার্সিংহোমে। ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার সকালে প্রসব বেদনা নিয়ে সোনাকোপা গ্রামের বছর বত্রিশের সুন্দরী বিবিকে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পুত্রসন্তান প্রসব করেন তিনি। তারপরেই ওই মহিলার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্তচাপ বাড়ে। তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে। বুধবার সকালে সেখানেই মারা যান সুন্দরী।
এরপরেই পরিবারের লোকজন জেলা হাসপাতাল থেকে দেহ ম্যাটাডোরে করে নিয়ে যান ওই নার্সিংহোমের সামনে। ম্যাটাডোরটি আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে শুরু হয় পথ অবরোধ। বেলা ১১টা নাগাদ অবরোধ শুরুর পরেই ফলতা থানা থেকে পুলিশ আসে। গোলমালের আশঙ্কায় তাদের মোতায়েন করা হয় নার্সিংহোমের সামনে।
অভিযোগ, নার্সিংহোমে চিকিৎসকের গাফিলতিতেই রোগিণীর অবস্থা খারাপ হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি, এই অভিযোগ তুলে শ’খানেক দুষ্কৃতী হামলা চালায় নার্সিহোমে। পুলিশ কার্যত কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। পুলিশকে মারধর করেই ভিতরে ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা। হামলাকারীদের ইটবৃষ্টিতে দুই পুলিশ কর্মীর মাথা ফাটে। নার্সিংহোমের কর্মীদেরও মারধর করা হয়। ভাঙচুর চলে আসবাবপত্র, সিসিটিভি, কম্পিউটার, মোটরবাইক, সহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুলিশের একটি গাড়িও। ক্যাসে রাখা নগদ টাকা লুঠপাঠ হয়েছে বলেও অভিযোগ। নার্সিংহোমের মালিক জাহির ইসলামের অভিযোগ, ‘‘এখানে রক্তের জোগান না থাকায় জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রসূতিকে। তিনি মারা গেলেন সেখানে, অথচ অন্যায় ভাবে প্রায় শ’খানেক দুষ্কৃতী মিলে ভাঙচুর-লুঠপাট চালাল নার্সিংহোমে। সমস্ত বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের ছোড়া ইটে পাঁচ পুলিশ জখম হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ধরা পড়েছে ৫ জন। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের আজ, বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে
তোলা হবে।