প্রকাশ্যে: শিকারে বেরিয়েছেন যাযাবর। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।
শীতের শুরু থেকে বিভিন্ন এলাকার যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষের আনাগোনা বাড়ে দেগঙ্গার গ্রামে। জানুয়ারির শুরুতে ওই সব যাযাবরদের ঠিকানা হয় স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অথবা মাঠের এক প্রান্তে। ছোট ছোট তাঁবু বেঁধে তার তলায় অস্থায়ী ঘর-সংসার বাঁধেন তাঁরা। সেই সঙ্গে পরিবারের পুরুষদের পশু-পাখি শিকারে বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়। সরু বাঁশের লাঠি পর পর বেঁধে, তাতে আঠা লাগিয়ে দোয়েল, মুনিয়া, কাঠবিড়ালি, পেঁচা, বাদুড় মারেন তাঁরা। সারা দিন শিকার করে থলেতে ভরে সন্ধ্যায় ফেরেন আস্তানায়। শিকার করা মাংস পুড়িয়ে খান। দেগঙ্গার বাসিন্দা পরিতোষ বাছাড়, দীনবন্ধু হাজরা, ফিরোজউদ্দিনদের মতে, প্রতি বছর শীত পড়তেই শিকারের সন্ধানে যাযাবরদের দেখা মেলে। হলুদ রঙের মুনিয়া, কালো-সাদা লেজঝোলা দোয়েল, ফিঙের দেখাই মিলছে না ইদানীং। কাঠবিড়ালিও কমে এসেছে এই শিকারিদের জন্য। যাযাবরদের বুঝিয়ে তাঁদের পেশা বদল করা দরকার। এ বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বন দফতরের আধিকারিক অসিত কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমাদের দফতরে মাত্র ছ’জন কর্মী। ফলে পশু, পাখি শিকার বন্ধের জন্য সচেতনতার ব্যবস্থা থাকলেও তা মানুষের মধ্যে প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব হচ্ছে না। পাখি অথবা পশু শিকার যাতে বন্ধ হয়, সে জন্য যাযাবর থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর কাজ চলছে।’’ পশু-পাখি নিধন বন্ধে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করে দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিন্টু সাহাজি বলেন, ‘‘যে ভাবে যাযাবরেরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে পশু-পাখি শিকার করছেন, তা মানা যায় না। এর ফলে এক দিকে যেমন প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, অন্য দিকে এলাকায় পাখি আসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।’’