বাঁ দিক থেকে গণেশ নস্কর, অভিযুক্ত অসীম বৈদ্য এবং মাধব পুরকাইত।
দুই বন্ধুকে কুপিয়ে খুন। শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে বজবজ থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খড়িবেড়িয়া এলাকায়। ওই এলাকার পণ্ডিতের মাঠ থেকে দুই বন্ধুকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূলের বুথ সভাপতি অসীম বৈদ্য এবং তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অসীম-সহ মোট তিন জনকে গ্রেফতার করেছে বজবজ থানার পুলিশ। ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ধৃতদের ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতদের নাম গণেশ নস্কর (৪৮) এবং মাধব পুরকাইত ওরফে পুঁটি (৪২)। শুক্রবার তাঁদের দু’জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় খড়িবেড়িয়া হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে জানান। মৃতের পরিবারের দাবি, তৃণমূলের বুথ সভাপতি অসীমের সঙ্গে কোনও এক সময় জমির দালালির কাজ করতেন মাধব। সেই সময় থেকেই দু’জনের ব্যক্তিগত শত্রুতা তৈরি হয়। মাধবের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগেও মাধবের বাড়িতে গিয়েছিলেন অসীম। তবে তাঁদের মধ্যে কী নিয়ে কথা হয়েছিল, তা তাঁর পরিবারের লোক বলতে পারেননি। অসীম তাঁকে খুনের হুমকি দিচ্ছিলেন বলে মাধবের পরিবারের লোকজনের দাবি। বর্তমানে মাধব মাছ এবং মাংসের ব্যবসা করতেন। গণেশ উলুবেড়িয়ায় জুট মিলের কর্মী ছিলেন।
শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ মাধব এবং তাঁর বন্ধু গণেশ বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় পণ্ডিতের মাঠের কাছে অসীম এবং তাঁর দলবল তাঁদের ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। মাধবের পরিবারের অভিযোগ, বচসা চলাকালীন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাধবের গলার নলি কেটে দেওয়া হয়। সম্ভবত মাধবকে খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় খুন করা হয় গণেশকেও। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে বসানো হয় পুলিশ পিকেট।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় মোট নয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি গঠন করা হয়েছে একটি বিশেষ তদন্তকারী দলও। নিহত মাধব এবং অভিযুক্ত অসীমের মধ্যে জমিজমা বিক্রি নিয়ে পূর্ব শত্রুতা ছিল বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।