বিক্ষোভ: পঞ্চায়েত গঠন না হওয়ার প্রতিবাদে। ছবি: নির্মল বসু
নির্বাচনের ছ’মাস পরেও বোর্ড গঠন হল না বাদুড়িয়ার আটুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। ফলে সব কাজ আটকে গিয়েছে। এমনকী, জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্রও মিলছে না বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে বুধবার পঞ্চায়েতের দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ এবং বিরোধী দলের লোকজন। বেলা ১২টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিডিও-র প্রতিনিধির প্রতিশ্রুতিতে বিকেল ৪টে নাগাদ অবরোধকারীরা শান্ত হন।
মে মাসে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। একই সময়ে বাদুড়িয়ার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতেও ভোট হয়। ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ইতিমধ্যেই বোর্ড গঠন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আটুরিয়া পঞ্চায়েতে এখনও হল না। এই পরিস্থিতিতে এলাকার গ্রামগুলিতে উন্নয়নের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের পক্ষে সরোজ মণ্ডল, কল্পনা মণ্ডল, ফকির গাজি, রুমেলা বিবিরা বলেন, ‘‘কেন বোর্ড গঠন করতে চাইছে না প্রশাসন তা আমরা জানি না। এ দিকে, বোর্ড গঠন না হওয়ায় আমরা সমস্যার মধ্যে পড়েছি। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পঞ্চায়েতে গিয়ে হয়রান হচ্ছেন। ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকায় পঞ্চায়েতের পক্ষে থেকে নিকাশি নালা পরিষ্কার কিংবা চুন-ব্লিচিং ছড়ানোর কাজও বন্ধ।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আটুরিয়া পঞ্চায়েতে মোট ১৯টি আসন। ১০টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ৪টি আসনে বিজেপি। ৪টিতে কংগ্রেস-সিপিএম জোট এবং ১টি আসনে জয়লাভ করে নির্দল প্রার্থী।
এ দিন বিরোধীদের সঙ্গে গ্রামের মানুষও অবিলম্বে বোর্ড গঠনের দাবি জানান। জোট সদস্য আনারুল সর্দার এবং গ্রামবাসী আলমগির গাজি, অহাব সর্দাররা বলেন, ‘‘আমরা চাই দ্রুত বোর্ড গঠন করে কাজ করা হোক। অথচ অজানা কারণে বোর্ড গঠন না হওয়ায় গ্রামের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।’’
পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অভীক বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরাও চাই গ্রামের উন্নয়ন। তবে কেন পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করা হচ্ছে না, তা প্রশাসন জানে।’’
এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চায়নি প্রশাসন। এক আধিকারিকের দাবি, আটুরিয়ায় বোর্ড গঠন হলে বড় রকম গন্ডগোলের আশঙ্কা আছে। শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেও বোর্ড গঠনে দেরি হচ্ছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর। সে কথা অবশ্য মানছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।
পঞ্চায়েতের আপ্তসহায়ক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, ‘‘আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই বোর্ড গঠনের কাজ হবে।’’