আবর্জনায় ভরেছে পিকনিক স্পট। নিজস্ব চিত্র
কাকদ্বীপের বুধাখালি পঞ্চায়েতের কাছারিবাড়ি গ্রামে মুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঝাউ জঙ্গলে ঘেরা মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে পিকনিক স্পট। কিন্তু নামখানা ব্লকের ওই পিকনিক স্পটে পানীয় জল, শৌচালয়ের মতো পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। ফলে নাজেহাল হচ্ছেন পর্যটকেরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে পরিকাঠামোর কথা বার বার জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।
কাছাড়িবাড়ি গ্রামের কাছে বছর আটেক আগে মুড়িগঙ্গা নদীর ধারে প্রায় আড়াই কিলোমিটার জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছিল পিকনিক স্পটটি। পাঁচ বছরের মধ্যেই তা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। চেহারা-ছবিতে বকখালি পিকনিক স্পটের সঙ্গে মিল হওয়ায় এর নামকরণ হয় ‘নিউ বকখালি’। শীতের কয়েক মাস কয়েকশো পর্যটক মুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঝাউ, কেওড়া, গরান, সুন্দরী গাছের জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশে দিনভর কাটিয়ে বাড়ি ফেরেন।
গত রবিবার ওই পিকনিক স্পটে গিয়ে দেখা গেল, নদীর ভাঙনে ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে নিউ বকখালি। এমনকী, পিকনিক স্পটের গাছ নির্বিচারে কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করা হচ্ছে। এর ফলে ভাঙন আরও বেড়েছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, আগে নদীর চরে হেঁটে যেতে আধ ঘণ্টা সময় লাগলেও এখন এক-দু’মিনিটেই হাঁটা যায়।
জায়গাটির পরিকাঠামো নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। শৌচালয়, পানীয় জলের ব্যবস্থা ভাল নয়। শৌচালয়ের অভাবে মহিলা ও ছোটদের সমস্যায় পড়তে হয়। প্রয়োজন হলে স্থানীয় বুধাখালি লক্ষ্মীনারায়ণ ক্লাব বা আশেপাশের কোনও বাড়ির শৌচালয় ব্যবহার করতে হয়। রান্নার জল জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় পিকনিক দলের রাঁধুনিদের। গ্রামের নলকূপ থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করতে বাধ্য হন তাঁরা।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত দিন ধরে পিকনিক স্পটটি চালু হলেও কোনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। প্রশাসনের নজরদারি, জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষণেরও ব্যবস্থা নেই বলে জানান তাঁরা। পর্যটকেরা প্লাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, বোতল ফেলে জায়গাটি দূষিত করে চলে যান। সাফ না হওয়ায় আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে এলাকা।
জয়নগর থেকে এসেছিলেন দেবাশিস নস্কর। তিনি বলেন, “এখানে লোকে পিকনিক করতে আসে বলে শুনে এসেছি। কিন্তু পানীয় জল বা শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই। বেশ সমস্যা হচ্ছে।”
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বছর চারেক আগে এই পিকনিক স্পটে এক মহিলা পর্যটকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তারপর থেকে এখানে কোনও সমস্যা হলে এলাকার লোকজন মাথা ঘামান না।
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা মালি মণ্ডল বলেন, “ওখানে তো অনেক দিন আগে পানীয় জলের নলকূপ ও শৌচালয় তৈরি করে দেওয়ার কথা। এখনও কেন হয়নি সে বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা ব্যবস্থা নেব। যাতে কেউ ম্যানগ্রোভ না কাটে, সে জন্য নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে।”