TMC

নিজের মূর্তি গড়ালেন গোসাবার বিধায়ক

রাজনীতিতে এসে বারবারই তাঁকে নানা বিপদের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে দাবি করেন দাপুটে নেতা জয়ন্ত

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোসাবা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০২:৪৫
Share:

আশঙ্কায়: নিজের মূর্তির সঙ্গে জয়ন্ত নস্কর। নিজস্ব চিত্র

যে কোনও দিন তিনি নাকি খুন হয়ে যেতে পারেন— এই আশঙ্কায় ভুগছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। আর সে জন্য বেঁচে থাকতে থাকতে নিজেরই মূর্তি গড়িয়ে ফেললেন খরচপাতি করে!

Advertisement

রাজনীতিতে এসে বারবারই তাঁকে নানা বিপদের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে দাবি করেন দাপুটে নেতা জয়ন্ত। তাঁর অভিযোগ, আগে আরএসপি, সিপিএম এবং এখন বিজেপি তাঁর ‘অন্যতম শত্রু।’

বছর তিনেক আগে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের এক কয়েদির ফোনে আড়ি পেতে পুলিশ জানতে পারে, গোসাবার বিধায়ককে খুনের চক্রান্ত করা হচ্ছে। সে সময়ে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। এই খবর পেয়ে জেলা পুলিশ জয়ন্তর নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। চারজন থেকে বাড়িয়ে মোট এগারোজন পুলিশ কর্মীকে জয়ন্তর নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়।

Advertisement

এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই কুমোরটুলিতে এক শিল্পীকে দিয়ে নিজের জীবদ্দশায় নিজেরই মূর্তি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন জয়ন্ত। মাসের পর মাস শিল্পীর কাছে গিয়ে ‘মডেল’ হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেছেন জয়ন্ত। তিনি বলেন, ‘‘অন্তত সাত থেকে আটবার বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য কুমোরটুলিতে গিয়ে শিল্পীর সামনে বসেছিলাম।”

অবশেষে দু’টি পূর্ণাবয়ব মূর্তি ও একটি আবক্ষ ফাইবারের মূর্তি তৈরি হয়েছে। কিছু দিন আগে সেই মূর্তি তিনটি বাসন্তীর বগুলাখালিতে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। এখনও মূর্তি অবশ্য প্রতিষ্ঠা পায়নি। নিজের বাড়িতেই রেখেছেন জয়ন্ত। জানালেন, সময় পেলেই সেগুলিকে ঝাড়পোঁছ করেন। বিধায়কের কথায়, “কোথাও প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা নিয়ে মূর্তি বানাইনি। আমার মৃত্যুর পরে যাতে আমার আত্মীয়-পরিজন, অনুগামীরা আমার স্মৃতির উদ্দেশ্যে কোথাও মূর্তি বসাতে চায়, সে জন্যই এগুলি বানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, গোসাবা, বাসন্তীর মতো জায়গায় যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের জীবনের মূল্য নেই। যে কোনও দিন রাজনৈতিক শত্রুর হাতে মৃত্যু হতে পারে। জয়ন্তর কথায়, ‘‘যদি দুষ্কৃতীর গুলিতে মরি, তা হলে কী হবে? তাই আমার মৃত্যুর পরেও যাতে নিজের লোকেরা আমার অভাব বোধ না করেন, তাই এই ব্যবস্থা করেছি।”

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুনীপ দাস বলেন, ‘‘ওঁর এই ভয় অমূলক নয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে নিজের দলের সদস্যদের হাতেই উনি খুন হতেই পারেন। তবে আমরা ওঁর দীর্ঘায়ু কামনা করি। কারণ, গোসাবা তথা বাংলা থেকে তৃণমলের বিদায় যেন উনি নিজের চোখে দেখে যেতে পারেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement