বিতর্কিত সেই তৃণমূল নেতা অতীশ সরকার। — নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা করছেন, তাঁদের মা-বোনের বিকৃত ছবি বাড়ির দেওয়ালে টাঙিয়ে দিয়ে আসার হুঁশিয়ারি দিলেন অশোকনগরের তৃণমূল নেতা অতীশ সরকার ওরফে ঝঙ্কু। তাঁর এ হেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সরব বিরোধীরা।
মেয়ো রোডে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সমাবেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে মমতা দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে কামড়াবেন না। কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।’’ তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতার এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এ বার সেই ‘ফোঁস’ প্রসঙ্গ টেনে অশোকনগরের তৃণমূল নেতা ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে বসলেন। এক দলীয় কর্মসূচি থেকে অতীশ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোঁস করতে বলেছেন, সাবধান হয়ে যান। আমরা যদি পাড়ায় পাড়ায় ফোঁস করতে শুরু করি, তবে বাড়ি থেকে বার হতে পারবেন তো?’’
মমতার বিরোধিতা করলে ফল ভাল হবে না, এমন হুমকিও দেন অশোকনগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর অতীশ। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। রবিবার সেখানেই আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত এক পথসভা থেকে অতীশ বলেন, ‘‘আমরা যদি ফোঁস করি, আপনার বাড়ির মা-বোনদের কুৎসা রটিয়ে যদি দরজায় টাঙিয়ে দিয়ে আসি, তা হলে সেই পোস্টার খুলতে পারবেন না। ওই দিন আর বেশি দূরে নেই। আমি এখানে দায়িত্ব নিয়ে বলে গেলাম।’’ অতীশের এই মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, অতীশের ওই বক্তব্যের অংশ এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন। সেখানে অতীশকে ‘তৃণমূলের গুণধর লুম্পেন বাহিনী’ বলে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত। অতীশের বক্তব্যের প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র এবং কনভেনার দীপ্তিমান বসু জানিয়েছেন, এ ভাবে ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে আন্দোলন রোখা যাবে না। একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএম নেতা আহমেদ আলি খানের গলাতেও। তবে তিনি পাল্টা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বলেই ফোঁস করতে যাবেন না, তা হলে জনগণ তৈরিই আছে। মাথায় লাঠি মেরে গর্তে ঢুকিয়ে দেবে।’’ অতীশের মন্তব্য প্রসঙ্গে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘এই বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আমার এবং আমাদের জেলা সভাপতি কাকলি ঘোষদস্তিদারের কথা হয়েছে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের অবস্থান জানাবেন কাকলিদি।’’