—প্রতীকী ছবি।
পূর্ব-নির্ধারিত বৈঠক হিসাবেই উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রতিনিধিরা। কিন্তু সেখানে পুরপ্রধান হাজির হতেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আলোচনাকক্ষ ছেড়ে এক-এক করে বেরিয়ে গেলেন খোদ শাসকদলের ওই সদস্যেরাই। দাবি তুললেন, পুরপ্রধান বদল করতে হবে! কারণ, তাঁর নেতৃত্বে কোনও কাজই ঠিক ভাবে হচ্ছে না।
শাসকদলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তাঁর দলেরই পুরপ্রতিনিধিদের এ হেন অনাস্থা প্রকাশের ঘটনা শুক্রবার ঘটেছে পানিহাটিতে। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের কোর কমিটির সম্প্রসারণ করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটিতে পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আর সেই নির্মলেরই খাসতালুক বলে পরিচিত পানিহাটিতে এমন ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। এ দিন ঘটনার পর থেকেই পানিহাটিতে জল্পনা চলছে, তা হলে কি সত্যিই পুরপ্রধান বদল করা হবে? যদিও বিষয়টি নিয়ে নির্মল কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পানিহাটির ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি করে কংগ্রেস ও সিপিএমের দখলে। বাকি তৃণমূলের। শুক্রবার ছিল বোর্ড মিটিং। সমস্ত পুরপ্রতিনিধির থাকার কথা থাকলেও তৃণমূলের ২৯ জন (পুরপ্রধান-সহ) এবং সিপিএম ও কংগ্রেসের দু’জন ছিলেন। দেখা যায়, একে একে সকলে এলেও নির্মলের পুত্র তথা চেয়ারম্যান পারিষদ তীর্থঙ্কর ঘোষ-সহ আরও তিন পুরপ্রতিনিধি, তাপস দে, স্বপন দাস ও সম্রাট চক্রবর্তী অনুপস্থিত। বৈঠকে পুরপ্রধান মলয় রায় আসতেই চার নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রবীর ভট্টাচার্য দাঁড়িয়ে পড়েন। বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ ওই পুরপ্রতিনিধি দাবি তোলেন, এই পুরপ্রধানের নেতৃত্ব মানবেন না। তাঁর অভিযোগ, পুরপ্রধানের নেতৃত্বে কোনও কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। অন্য পুরপ্রতিনিধিরাও প্রবীরকে সমর্থন জানান। তাঁরা মলয়কে পুরপ্রধান পদ থেকে সরানোর দাবি তোলেন। পুরপ্রধান বদল না হলে বোর্ড মিটিংয়েও আসবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন সকলে। আরও দাবি, দলের উচ্চ নেতৃত্বকে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। ২৮ জন পুরপ্রতিনিধি আলোচনাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান।
বাইরে তাঁদের কেউ মুখ খুলতে চাননি। পরে মলয় বলেন, ‘‘কেন এমন হল, বুঝতে পারছি না। কোরাম না হওয়ায় বোর্ড মিটিং করা যায়নি। দলীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব।’’
তৃণমূলের দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস রায় শুধু বলেন, ‘‘সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যানের নিজের বিধানসভা এলাকার পুরসভার ঘটনা। তাই দলের উচ্চ নেতৃত্ব বিষয়টি নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে আশা করি।’’