বে-নিয়ম: মঞ্চে হাজির নেতাদের মাস্ক নেই, সামনের ভিড়ে দূরত্ববিধি উধাও। ছবি: সামসুল হুদা।
দিন কয়েক আগে করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছিল। কোভিড বিধি শিকেয় তুলে রবিবার সেই এলাকাতেই হল তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন। প্রশাসনের অনুমতিও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকাত মোল্লার উদ্যোগে জীবনতলা বেগম রোকেয়া কলেজ মাঠে এ দিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, তৃণমূলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি যোগরঞ্জন হালদার-সহ জেলার ১৬ জন তৃণমূল বিধায়ক।
পুজোর পর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন ব্লকে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন এলাকাকে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার জেলাশাসক পি উলগানাথন এক নির্দেশিকায় জেলার ৪১টি জায়গাকে চিহ্নিত করে নতুন করে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ক্যানিং ২ ব্লকের সারেঙ্গাবাদ পঞ্চায়েতের হাওড়ামারি কলেজ মোড়, সামাদের মোড়, হাজি পেট্রল পাম্প থেকে আরও কিছু এলাকা।
এ দিন সারেঙ্গাবাদ পঞ্চায়েতের জীবনতলা বেগম রোকেয়া কলেজ মাঠেই আয়োজন হয়েছিল কর্মিসভার। ক্যানিং ২ ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েত এলাকার বঙ্গজননী মহিলা কমিটির মহিলা সদস্য-সহ প্রতিটি অঞ্চল ও বুথের সভাপতি ও কর্মীদের নিয়ে আয়োজন হয়। প্রায় কুড়ি হাজার কর্মী উপস্থিত ছিলেন। পাত পেড়ে খাওয়াও হয় তাঁদের। মঞ্চে অধিকাংশ নেতা-নেত্রীর মাস্ক ছিল না। শারীরিক দূরত্ববিধিও মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফের চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “যত আইন বিরোধীদের জন্য। শাসকদল আইন অমান্য করলে সাতখুন মাফ। প্রশাসন আমাদের কোনও মিটিং মিছিল করার অনুমতি দেয় না। অথচ শাসকদল প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে কন্টেনমেন্ট জ়োনে এত বড় কর্মিসভা করল। এর ফলে ওই এলাকায় সংক্রমণ বাড়তে পারে।”
সওকাত বলেন, “এক মাস আগে থেকে এই কর্মী সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া, আমরা যে মাঠে সম্মেলন করেছি, তা কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে। নিয়ম মেনেই সম্মেলন হয়েছে। তবে আমরা যতজন কর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি লোকজন চলে আসেন। আমরা তাঁদের আটকাতে পারেনি। সে কারণে একটু সমস্যা তৈরি হয়েছে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, “কন্টেনমেন্ট জ়োনে বেশ কিছু বিধিনিষেধ থাকে। সেখানে কোনও রকম জমায়েত করা যায় না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”