শ্যামনগরের একটি গির্জা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
পাশ্চাত্য ঔপনিবেশিকতার প্রভাবে ব্যারাকপুরে চার্চের সংখ্যা যথেষ্ট। বড়দিনের সকাল থেকেই সেখানে প্রার্থনা করতে ভিড় করেন মানুষ। পাশাপাশি অন্য দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতেও অসংখ্য মানুষের জমায়েত হয়। এমন উৎসবের মেজাজে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে সে জন্য বাড়তি নিরাপত্তার দিকে নজর দিচ্ছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। নজরদারি জোরদার করতে গোটা শিল্পাঞ্চলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ব্যারাকপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্দেহভাজন কয়েক জন বাংলাদেশি ধরা পড়ায় নিরাপত্তা আরও কড়া হচ্ছে, দাবি পুলিশের। কমিশনারেট সূত্রের খবর, নজরদারি চালানোর কাজে শনিবার থেকেই পুলিশকর্তারা খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন, রাস্তা এবং গঙ্গার ঘাট মিলিয়ে এলাকার প্রায় ২০০টি সিসি ক্যামেরা চালু আছে কি না। চার্চ এবং দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে নজর রাখবে সাদা পোশাকের পুলিশ। মহিলা পুলিশের একটি বাহিনীকেও তৈরি রাখা হচ্ছে। ভিড়ে নজরদারি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই বাহিনীকেও। স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ, গোয়েন্দা বিভাগ ছাড়াও অতিরিক্ত ৩০০ পুলিশকর্মী নজরদারির দায়িত্বে থাকছেন।
উৎসবের আমেজ লাগছে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার হোমগুলিতেও। সোমবার সকাল থেকেই সেখানে ধূমধাম করে যিশুর জন্মদিন পালন হবে। সেই উপলক্ষে স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ব্যক্তি আসবেন শিল্পাঞ্চলে। স্থানীয় একটি মোটরবাইক রাইডিং দলের সদস্যেরা ছোটদের দিয়ে হোমগুলিতে চারা লাগাবেন। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিশুদের নিয়ে গঙ্গা ভ্রমণেরও আয়োজন করছে।
গোয়েন্দা রিপোর্টের তথ্য বলছে, সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের অস্থায়ী ঠিকানা ব্যারাকপুর। এই শিল্পাঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান এমন যে, অপরাধ ঘটিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই গঙ্গা পেরিয়ে গা ঢাকা দিতে পারে দুষ্কৃতীরা। তাই গঙ্গার ঘাটগুলিতেও সিসি ক্যামেরা ঠিক মতো কাজ করছে কি না সরেজমিনে দেখেছেন কর্তারা। উৎসবের মরসুমে যাতে কোনও রকম নাশকতা ঘটিয়ে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য এই বাড়তি সুরক্ষা বলয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি চার্চ রয়েছে, যেগুলি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় পড়ে। ব্যারাকপুর ব্রিগেড সূত্রের খবর, সেখানে যাতে কোনও নাশকতামূলক ঘটনা না ঘটে, সে দিকে নজরদারি রাখবেন সেনা বাহিনীর গোয়েন্দারাও।
ব্যারাকপুরের বিদায়ী পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘সোমবার বড়দিন হওয়ায় রবিবার থেকেই উৎসবের ভিড় শুরু হয়েছে। দক্ষিণেশ্বর থেকে হালিশহর পর্যন্ত ঘাট এবং দ্রষ্টব্য জায়গাগুলিতে তাই পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’