জখম: দেগঙ্গায়। নিজস্ব চিত্র
দাহ্য রাসায়নিক কার্বাইড নিয়ে খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেল তিন শিশু। সোমবার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার মির্জানগরে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় গুরুতর জখম ফিরদোসি খাতুন নামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেড়াচাঁপা-১ পঞ্চায়েতের পাশে মির্জানগর এফ পি স্কুলের মাঠে এ দিন সকালে বিপজ্জনক ভাবে খেলা করছিল জনা ছয়েক শিশু। স্থানীয়েরা জানান, কাচ বা প্লাস্টিকের বোতলে জল ভরে তার মধ্যে কার্বাইড ফেলে আগুন ধরিয়ে ছুড়ে ফেললে তা বোমার মতো সশব্দে ফেটে ওঠে। সাবেরা বিবি নামে স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘‘এ দিন ওই শিশুরা বোতলের জলে কার্বাইড ভরে আগুন ধরিয়ে ছুড়ছিল মাটিতে। তীব্র শব্দে আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল চার দিকে। সেই শব্দ শুনে তা দেখতে সেখানে ভিড় জমায় আরও কিছু শিশু।’’ স্থানীয়দের একাংশ জানান, তীব্র আওয়াজ শুনে বেরিয়ে এসে তাঁরা দেখেন ভাঙা কাচ ও প্লাস্টিকের টুকরোয় মাঠ ভরে গিয়েছে। তখন কয়েকজন ওই শিশুদের বকাঝকা করেন। তাতে ভয় পেয়ে শিশুরা মাঠ থেকে একটি জলের ধারে চলে যায়। আজগার আলি নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ভয় পেয়ে ওই শিশুরা বাকি সব কার্বাইড জলে ফেলে দেয়। কিন্তু এক জন তাতে আগুন ধরিয়ে দিতেই বিপত্তি ঘটে যায়।’’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুনের শিখা লাফিয়ে প্রায় পাঁচ ফুট উপরে উঠে যায়। তাতেই জখম হয় পাশে থাকা তিন শিশু। তাদের স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গুরুতর জখম ফিরদোসিকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এ দিন হাসপাতালে শুয়ে ফিরদোসি বলে, ‘‘জলের মধ্যে আগুন জ্বলতে দেখে আনন্দ হচ্ছিল। কিন্তু এমনটা হবে তা বুঝতে পারিনি।’’
এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় জলের মধ্যে কার্বাইড ফেলে হাটেবাজারে গ্যাসের আলো জ্বালানো হয়। এ ছাড়াও কাচা ফল পাকানোর কাজেও ব্যবহৃত হয় কার্বাইড। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আম-লিচুর এই মরসুমে বেশির ভাগ দোকানে অবলীলায় বিক্রি হচ্ছে কার্বাইডের মতো দাহ্য রাসায়নিক। সোমবারের ঘটনার পরে কার্বাইড বিক্রির উপরে নজরদারির আর্জি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে সতকর্তামূলক প্রচার চালানো হবে।