বেহাল: এই পরিকাঠামোতেই চলছে পড়াশোনা। ছবি: দিলীপ নস্কর
দু’টি ঘরে একই সঙ্গে ক্লাস চলে চারটি। মিড ডে মিলের রান্নার জন্য যে ঘর তৈরি হয়েছিল, ক্লাসরুমের অভাবে সেখানেও বসাতে হয় পড়ুয়াদের। রান্না হয় পাশের স্কুলে।
ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টালের দেবীনিবাস জুনিয়র হাইস্কুলের ঘরগুলি এখনও অসমাপ্ত। শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নামখানা ব্লকের ফ্রেজারগঞ্জ পঞ্চায়েতে ওই গ্রামের কাছাকাছি কোনও হাইস্কুল নেই। পঞ্চম শ্রেণির পর অনেকেই স্কুলছুট হত। তা আটকাতে ২০১২ সালে জুনিয়র হাইস্কুলটি অনুমোদন পায়। ওই বছরই সরকারি বরাদ্দ টাকায় দানের জমিতে একতলা স্কুল ভবন নির্মাণ হয়।
পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। পড়ুয়ার সংখ্যা ৪২ জন। শুরুতে ১১০ জনের বেশি ছাত্রছাত্রী ছিল। শিক্ষক এবং শ্রেণিকক্ষের অভাবে অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের অন্যত্র পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গণেশচন্দ্র লায়া বলেন, ‘‘ক্লাসঘরের অভাবে এক ঘরের মধ্যে গাদাগাদি করে বসানো হত শিক্ষকদের। পরে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় রান্নাঘর নির্মাণ হয়। বছর তিনেক ধরে রান্নাঘর অফিস ঘরে পরিণত হয়েছে। সেখানে আবার পঠনপাঠনও চলে। অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষক নিয়োগের জন্য একাধিকবার জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’
বর্তমানে ওই স্কুলে একজন মাত্র স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন। কয়েকজন এলাকার যুবকদের দিয়ে কোনও ভাবে স্কুল চলছে। স্থায়ী শিক্ষক ছাড়া বাকি তিনজন ওই স্কুলে পাঁচশো-হাজার টাকায় সারা মাস পড়ান। সেই টাকা জোগান দিতে হয় স্কুলকেই। স্কুল ভবনের দেওয়ালে এখনও প্লাস্টার হয়নি। কোনও খেলার মাঠ নেই। শৌচালয়ের অবস্থাও বেহাল।
জমিদাতা নটবর রায়ের আক্ষেপ, ‘‘জুনিয়র হাইস্কুলের অনুমোদন পাওয়ার পরে আমি জমি দান করেছিলাম। চুক্তিপত্রে ছিল, আমার বাবা ভবতারণ রায়ের নামে স্কুল হবে। কিন্তু তা এখনও হল না। অনেক আশা ছিল নিয়ে। শিক্ষক এবং পরিকাঠামোর অভাবে এখন বেহাল দশা। গ্রামের ছেলেমেয়েদের দূরের স্কুলে যেতে হচ্ছে।’’
নামখানার স্কুল পরিদর্শক মৃণাল দাস বলেন, ‘‘আমি ওই স্কুলের ব্যাপারে সঙ্গে কথা বলে দেখব।’’ তাতে কাজের কাজ কতটুকু হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে অভিভাবকদের।