প্রস্তুতি: সতর্ক করতে চলছে প্রচার। ছবি: সমরেশ মণ্ডল
নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার কটালের জেরে বুধ ও বৃহস্পতিবার ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস। এর জেরে নদী ও সমুদ্র উত্তাল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপকূল এলাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরিস্থিতির মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
এখন মাছ ধরার মরসুম চলছে। সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর ও পাথরপ্রতিমা থেকে প্রায় আড়াই হাজার ট্রলার মাঝসমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল। মৎস্য দফতরের তরফে মঙ্গলবার ট্রলার-সহ মৎস্যজীবীদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিন বিকেলের মধ্যে বেশিরভাগ ট্রলারই ফিরে এসেছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগরের মৎস্য বন্দরগুলিতে এ বিষয়ে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।
সতর্ক করা হয়েছে চাষিদেরও। গত বছর ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের জেরে নোনা জল ঢুকে সুন্দরবন উপকূল এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে চাষের ক্ষতি হয়েছিল। এখানে প্রচুর পান চাষ হয়। ঝড়ের আগে পানের বরজের চারপাশে বাঁধন দিতে বলা হয়েছে। আনাজ বাগানের চারপাশে নালা কাটতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ইয়াসের পরে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিছু কিছু সংস্কার হলেও একের পর এক কটাল ও নিম্নচাপের জেরে বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফের দুর্যোগের পূর্বাভাস পেয়ে সাগর, নামখানা, মৌসুনি, ঘোড়ামারা, পাথরপ্রতিমা দ্বীপের বেহাল বাঁধগুলি নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রশাসন সূত্রে অবশ্য খবর, দুর্যোগের দু’দিন উপকূল এলাকায় কড়া নজরদারি চলবে। জেলা প্রশাসনের তরফে ওই এলাকার পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন ও সেচ দফতরকে সতর্ক করা হয়েছে। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে মহকুমার চারটি ব্লকের উপকূল এলাকায় ফ্লাড সেন্টারগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তৈরি আছেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। এ ছাড়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ, ত্রিপল মজুত রাখা হয়েছে। কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’দিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস মিলেছে। মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। অন্যান্য পরিস্থিতির জন্যও আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’’