নিজামুদ্দিন মণ্ডল
গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হল শাসক ও বিরোধীদের চাপানউতোর। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলে রেল অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর থানা এলাকার মল্লিকপুরে। মৃতের নাম নিজামুদ্দিন মণ্ডল (৩২)। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। সিপিএম এবং তৃণমূল, উভয়েই ওই যুবককে তাদের দলের সমর্থক বলে দাবি করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে নিজামুদ্দিনকে গুলি করা হয়। তাঁর বুকে গুলি লাগে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবককে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ব্যক্তিগত আক্রাশের জেরে এই ঘটনা। বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়েছিল। তার পরেই গুলি ছোড়া হয়েছে।’’ পুলিশের ধারণা, দু’পক্ষই মত্ত অবস্থায় ছিল। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ মল্লিকপুর রেলগেট থেকে কিছুটা দূরে মন্দিরতলায় কয়েক জনের সঙ্গে আড্ডা মারছিলেন নিজামুদ্দিন। আধ ঘণ্টা পরে তাঁরা রেলগেটের দিকে আসছিলেন। সে সময়ে তাঁদের পথ আটকায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী খুরশিদ শেখ-সহ জনা আটেক ব্যক্তি। কোনও একটি বিষয় নিয়ে সাবির নামে নিজামের এক সঙ্গীর সঙ্গে খুরশিদের বচসা হয়। তার প্রতিবাদ করেন নিজাম। তদন্তকারীরা জেনেছেন, এর পরেই গণেশপুরের বাসিন্দা আলতাফ শেখকে ফোন করে ডেকে নেয় খুরশিদ। অভিযোগ, সে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে নিজামকে গুলি করে। বারুইপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, আলতাফের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি-সহ একাধিক অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। লোকসভা ভোটের সময়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে।
এ দিকে, রবিবার সকালে ওই যুবকের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই শাসক ও বিরোধী দলের নেতাদের চাপানউতোর শুরু হয়ে যায়। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, নিজামউদ্দিন ছিলেন তাঁদের সমর্থক। সুজনবাবু বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে উনি আমাদের দলের পোলিং এজেন্ট ছিলেন।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল পরিচালিত মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হবিবুর রহমান নিজামুদ্দিনকে তাঁদের দলের সমর্থক বলে দাবি করেছেন। নিজামের স্ত্রী সালিমা বিবি বলেন, ‘‘শনিবার রাত ১২টা নাগাদ ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এ দিন ভোরে জানতে পারি, গুলিতে মারা গিয়েছে।’’
দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল সাড়ে আটটা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ চলে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর জেরে ডায়মন্ড হারবার ও লক্ষ্মীকান্তপুর শাখায় কয়েকটি ট্রেন বাতিল করতে হয়।