মল্লিকা নস্কর
ভোরের ঝড়-বৃষ্টির সময়ে বজ্রপাতে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। সোমবার বারুইপুর থানা এলাকার এক গ্রামের বাসিন্দা মল্লিকা নস্কর (১৬) নামে ওই ছাত্রীকে ঝলসে যাওয়া অবস্থায় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় মল্লিকার জেঠতুতো ভাই, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র, আকাশ নস্করও গুরুতর জখম হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, মল্লিকার গোটা দেহই পুড়ে গিয়েছিল। অর্জুনের দেহের প্রায় তিরিশ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মল্লিকাদের বাড়ির উঠোনে ধান ছড়ানো ছিল। কয়েক দিনের রোদে উঠোনে ওই ধান শুকোনো হচ্ছিল। রবিবার বিকেলে মল্লিকার বাবা ও মা এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। দুই ভাই-বোন জেঠিমার কাছেই ছিল। ভোরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে ঘুম থেকে উঠে পড়েন জেঠু-জেঠিমা। বৃষ্টি থেকে ধান বাঁচাতে মল্লিকাকেও ডাকাডাকি করে ঘুম থেকে তোলেন তাঁরা। আচমকা ঝড়ের সময়ে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উঠোনও তখন পুরো অন্ধকার। মল্লিকাকে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে তা হাতে নিয়ে উঁচু করে ধরতে বলেন জেঠু-জেঠিমা। তুমুল বৃষ্টির সময়ে আচমকা বিকট শব্দে বাড়ির উপরেই বজ্রপাত হয়। হ্যারিকেন হাতে নিয়ে থাকা মল্লিকার উপরেই সরাসরি বাজ পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে কালো হয়ে যায় সে। প্রতিবেশীরা এসে তাকে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। মল্লিকার বাবা জয়দেব নস্কর বলেন, ‘‘কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল! মেয়ে পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। মাধ্যমিক পরীক্ষা খুব ভাল হয়েছিল বলে জানিয়েছিল। কিন্তু এখন আর কী হবে? মেয়েটাই তো চলে গেল।’’ মল্লিকার মৃতদেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বারুইপুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অর্জুনের চিকিৎসা চলছে। প্রয়োজনে তাকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হতে পারে।