প্রহৃত: ছাত্র। নিজস্ব চিত্র
দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে এলোপাথাড়ি ঘুষি মারার অভিযোগ উঠল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর গাঁড়াপোতা উচ্চবিদ্যালয়ে।
ওই ঘটনায় ছাত্রের বাবা দেবাশিস পাইক রাতে বনগাঁ থানায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম পঙ্কজ ব্যাপারী। বনগাঁ থানার আইসি মানস চৌধুরী জানিয়েছেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পঙ্কজ অবশ্য মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় কুন্দিপুরের বাসিন্দা দশম শ্রেণির ছাত্র দুর্জয় পাইক। শনিবার দুপুরে তৃতীয় পিরিয়ডের পর দুর্জয়ের পেনের কালি ফুরিয়ে যায়। সে ক্লাসের মধ্যে দূর থেকে পেনটি দরজার পাশে থাকা ডাস্টবিনে ভিতর ছুড়ে মারে। পেন ডাস্টবিনে না পড়ে গিয়ে লাগে পঙ্কজের গায়ে। ওই সময় তিনি ক্লাসে ঢুকছিলেন। অভিযোগ, পেনটি তাঁর শরীরে লাগতেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। দুর্জয়কে ধরে যথেচ্ছ কিল ঘুষি মারেন। দুর্জয়ের বাবা দেবাশিস বলেন, ‘‘স্কুল থেকে শিক্ষক এবং ছাত্রদের ফোন পেয়ে স্কুলে আসি। ছেলে মার খেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। ওই শিক্ষকের কাছে কেন মেরেছেন জানতে চাইলে, তিনি আমার সঙ্গেও খারাপ আচারণ করেন। ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।’’
হাসপাতাল ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্জয়ের হাতে, মাথায়, বুকে ব্যথা রয়েছে। তার সিটি স্ক্যান ও বুকের এক্স-রে করার কথা বলেছেন চিকিৎসকেরা। প্রধান শিক্ষক মনোজ সাহা শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন। ছাত্রের চিকিৎসার তদারকি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রটিকে এ ভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি শিক্ষা দফতরেও জানানো হচ্ছে।’’ বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি নন্দদুলাল বসু বলেন, ‘‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও ছাত্র পেটানোর অভিযোগ রয়েছে। ওঁনাকে আমরা সতর্ক করে দিয়েছিলাম। এ দিনের ঘটনা নিয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’
পঙ্কজ বলেন, ‘‘আমার শরীর লক্ষ্য করে ওই ছাত্র কলম ছুড়ে মেরেছে। আমি রেগে গিয়েছিলাম। কিন্তু মারধর করিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ শিক্ষকের দাবি, অতীতে ছাত্ররা তাঁকে বালি ও বোতল ছুড়ে মেরেছিল। তিনি থানাতেও অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই চক্রান্ত করছে।’’