স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমিতে সাবস্টেশন, আপত্তি গ্রামবাসীদের

সমস্যা মেটাতে সোমবার বনগাঁর মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। সুদীপবাবু বলেন, ‘‘বৈঠকে সব পক্ষের মতামত ও প্রশাসনের নিজস্ব মতামতের একটি কপি জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বাগদা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০০:৩৫
Share:

বিক্ষোভ: আন্দোলনে গ্রামবাসীরা নিজস্ব চিত্র

লো ভোল্টেজ দূর করতে বাগদা ব্লকের নাটাবেড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমিতে একটি সাব স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। কিন্তু তাতে বাধা দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা।

Advertisement

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি থেকে প্রকল্পটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক-সহ বিভিন্ন মহলে চিঠি দিয়েছেন। এলাকায় মিটিং-মিছিলও করছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাঁচিলে পোস্টার মারা হয়েছে। তাতে লেখা, ‘পাওয়ার হাউজ করে হাসপাতাল ধ্বংস করা যাবে না।’ স্থানীয় বিধায়ক, কংগ্রেসের দুলাল বর বলেন, ‘‘আমাকেও প্রকল্প সম্পর্কে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও জমি আছে। সেখানে সাব স্টেশন করা যেতেই পারে।’’

সমস্যা মেটাতে সোমবার বনগাঁর মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। সুদীপবাবু বলেন, ‘‘বৈঠকে সব পক্ষের মতামত ও প্রশাসনের নিজস্ব মতামতের একটি কপি জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর পঞ্চাশ আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের দানের জমিতে গড়ে ওঠে নাটাবেড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরির সময়ে স্বেচ্ছাশ্রমও দিয়েছিলেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি ছিল ২ একর ৪৫ শতক। আগে সর্বক্ষণ চিকিৎসক থাকতেন। ১০টি শয্যায় রোগী ভর্তির ব্যবস্থা ছিল। সে সব এখন অতীত। এখন শুধু বহির্বিভাগে চিকিৎসক রোগী দেখেন।

প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সাব স্টেশনের জন্য ৩১ শতক জমি নিয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। তাতেই আপত্তি কিছু মানুষের।

কেন গ্রামবাসীরা আপত্তি করছেন? তাঁদের দাবি, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে বাগদা ও বনগাঁ ব্লক-সহ নদিয়ার একাংশের মানুষ নির্ভরশীল। রোজ প্রায় আড়াইশো জনের ভিড় হয়। বহু দিন ধরে এলাকার মানুষ এখানে ফের শয্যা চালু করে রোগী ভর্তির দাবি জানিয়ে আসছেন। স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, জরুরি বিভাগ চালু ও রোগী ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি সাব স্টেশনের জন্য নেওয়া হলে এখানে চিকিৎসা পরিকাঠামো ভেঙে পড়বে বলে স্থানীয় মানুষজনের আশঙ্কা।

অধীর পাল, মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী, জুলফিকার আলি মণ্ডল নামে কয়েকজন জানালেন, সাব স্টেশন তৈরি হোক, তাঁরাও চান। কিন্তু তা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমিতে নয়। পাশেই জোড়াপোঁতা এলাকায় সরকারের খাস জমি রয়েছে। সেখানে সাব স্টেশনটি তৈরি হোক। যদি আরও কিছু জমির প্রয়োজন হয়, তা হলে চাষিরা সরকারি মূল্যে জমি দিতে রাজি বলেও জানালেন তাঁরা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদা ব্লকে বিদ্যুতের একটি মাত্র সাব স্টেশন রয়েছে। সেটি হেলেঞ্চায়। নাটাবেড়িয়ায় সাব স্টেশনটি তৈরি হলে নাটাবেড়িয়া, বাজিতপুর, সিন্দ্রাণী-সহ বহু এলাকায় লো ভোল্টেজের সমস্যা কমবে।

প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য মনে করেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমিতে সাব স্টেশনটি তৈরি হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা পরিকাঠামোর কোনও ক্ষতি হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement