নােজহাল: ভিড় খেয়াঘাটে। নৌকোর অপেক্ষায় পরীক্ষার্থীরা। নিজস্ব চিত্র
জেটিঘাটের সমস্যা। তার মধ্যে খেয়াঘাটে একটি মাত্র নৌকো চলাচলের জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে নাজেহাল হল বহু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
হিঙ্গলগঞ্জের গৌড়েশ্বর নদীতে রোজ একটি নৌকোই পারাপার করে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার্থীরা আশা করেছিল, নৌকোর সংখ্যা বাড়ানো হবে। কিন্তু তা হয়নি। ফলে ভোগান্তি হয় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। অনেকে জানায়, মামুদপুরে পরীক্ষাকেন্দ্র তাদের। সেখানে পরীক্ষা শুরুর সামান্য আগে পৌঁছতে পেরেছে অনেকে।
হাসনাবাদ থানার বিশপুর ও খেজুরবাড়িয়া গ্রামের দুই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের এ বছর সিট পড়েছে পাশের গ্রাম হিঙ্গলগঞ্জের মামুদপুর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে। এই দুই স্কুলের কয়েক’শো পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা ঘাটে এসে দেখেন, অন্য দিনের মতোই এ দিনও একটি মাত্র নৌকো চলছে। ভাটার টানে গৌড়েশ্বর নদীর জলের স্তর সকালের দিকে অনেক নীচে থাকে। মামুদপুর খেয়াঘাটের শেষ সিঁড়ির থেকে প্রায় পাঁচ ফুট নীচে জল। ওই সময়ে যাত্রী পারাপার কার্যত অসম্ভব। বালতির উপরে উঠে এক এক করে নৌকোয় সকলকে তোলেন মাঝি। তাতেও অনেকটা সময় যায়।
অভিভাবকেরা জানান, সমস্যা দেখে নৌকোয় বেশি যাত্রী তুলতে বাধ্য করা হয় মাঝিকে। ঝুঁকি নিয়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয় ছেলেমেয়েরা। উৎপল মণ্ডল, শিবপদ সর্দার, মৃণাল প্রামাণিক নামে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘‘যে ভাবে মামুদপুর খেয়াঘাটে নৌকো থেকে হাত ধরে টেনে টেনে খেয়াঘাটে তুলতে হচ্ছে, তাতে রীতিমতো ভয় লাগছিল। অনেকে পড়েও গিয়েছে। এ দিকে, কেন্দ্রে পৌঁছনোরও তাড়া সকলের। পরীক্ষার দিনগুলিতে অন্তত দু’টি করে নৌকো প্রয়োজন।’’ তৃষ্ণা বর, কৃষ্ণা সর্দার নামে দুই ছাত্রীকে এ দিন দেখা গেল ৯টা ৫০ নাগাদ অর্থাৎ পরীক্ষা শুরু হওয়ার মাত্র ১০ মিনিট আগে দৌড়তে দৌড়তে মামুদপুর স্কুলের গেটের সামনে পৌঁছতে। তারা বলে, ‘‘বিশপুর খেয়াঘাটে ৯টায় পৌঁছে দেখি, প্রচুর ভিড়। তাই সাইকেল নিয়ে আটকে গিয়েছিলাম। শেষে সাইকেল খেয়াঘাটে রেখে টোটো করে এলাম।’’ শোভা দলুই, রিনা মণ্ডল নামে কয়েকজন অভিভাবক জানান, মেয়েদের নিয়ে নদীর চরে নেমে কাদা ঠেলে নৌকোয় উঠতে হয়েছে।
এ বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুদীপ মণ্ডল ও পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সহিদুল্লা গাজি জানান, ‘‘মূলত ভাটার কারণে জলের স্তর জেটিঘাট থেকে অনেকটা নীচে নেমে যাওয়ার জেরে এই ভোগান্তি হয়। পরীক্ষার্থীদের দ্রুত নদী পারাপারের জন্য পরীক্ষার দিনগুলিতে দু’টো করে নৌকা চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একটি নৌকো ভাটার সময়ে বারুণহাটে আটকে পড়ে।’’ তাঁরা আরও জানান, আগামী পরীক্ষার দিনগুলিতে অবশ্যই দু’টো করে নৌকোর ব্যবস্থা থাকবে।