উপপ্রধান গৌরী নিজেই বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ কেন্দ্রের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের এফবিসি সদস্য। এই সুযোগে তিনি দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের বিবাহিতা মহিলাদের জন্য নির্ধারিত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। বুধবার এ নিয়ে হুলস্থুল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার কামদেবপুরে। কী ভাবে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা স্কুলছাত্রের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে, তা নিয়ে বিস্মিত ছাত্রের পরিবারই।
ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, খোদ তৃণমূলের উপপ্রধানের কাছে সমস্যার কথা জানাতে গেলে তিনি জানান, তাঁকে ওই টাকা তুলে দিতে হবে। রাজি না হওয়ায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বৃত্তির টাকা তুলতে পারছে না তফসিলি জাতিভুক্ত ওই পড়ুয়া। তার পরিবারের মাধ্যমেই প্রকাশ্যে এসেছে এই অভিযোগ। অন্য দিকে, এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি অভিযুক্ত।
স্কুলছাত্রের দাদু শুকদেব দাস জানান, নাতির বৃত্তির টাকার জন্য উপপ্রধানের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলেন তাঁরা। তাতে কয়েক দফায় স্কুল থেকে পাঠানো ২,০০০ টাকা জমা পড়েছে। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে তিনি দেখেন, জমা হয়েছে ৮,০০০ টাকা। কোথা থেকে এই টাকা এল? খোঁজ নিয়ে শুকদেব জানতে পারেন, ওই টাকা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের। এর পর তিনি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের পরিচালক তথা উপপ্রধান গৌরী দুয়ারীর কাছে যান। কিন্তু গৌরী নাকি দাবি করেন, ওই টাকা তাঁর হাতে তুলে দিলে তবেই ছাত্র তার প্রাপ্য ২,০০০ টাকা পাবে।
স্কুলছাত্রের দাদুর আরও অভিযোগ, মাসের পর মাস তাঁর নাতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে। ওই টাকা তিনি উপপ্রধানের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করায় স্কুলছাত্রের অ্যাকাউন্টই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুকদেব জানান, তাঁরা এখন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, উপপ্রধান গৌরী নিজেই বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ কেন্দ্রের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের এফবিসি সদস্য। তাই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র চালানোর সুযোগ নিয়ে তিনি এই দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপপ্রধান তথা গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের পরিচালক গৌরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পঞ্চায়েত কেন্দ্রে বসেই তিনি জানিয়ে দেন, এ নিয়ে কিছুই বলবেন না।
প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পটি রাজ্যের বিবাহিতা মহিলাদের জন্য। মোট দু'টি শ্রেণিতে ভাগ করে যোগ্য প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায় রাজ্য। তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির ক্ষেত্রে মাসে ১০০০ টাকা এবং সাধারণ শ্রেণির (জেনারেল কাস্ট) বধূদের ৫০০ টাকা করে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়।