মৃত রাহুল পাল। নিজস্ব চিত্র।
বর্ষশেষের রাতে ইটের টুকরো দিয়ে রাস্তায় ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ লিখছিলেন চার বন্ধু। ওই সময়ে একটি মিনি ট্রাক এসে তাঁদের ধাক্কা মারে। জখম হন চারজনই। পরে মারা গিয়েছেন এক জন।
সোমবার রাতে হাবড়ার কুলতলায় হাবড়া-বদর সড়কের ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জখম চার জনকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা রাহুল পাল (২০) ও পিকলু করকে আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে আরজিকরে রাহুল মারা গিয়েছেন। পিকলু চিকিৎসাধীন। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে ওই রাস্তা অবরোধ করেন এলাকাবাসী। পুলিশ এসে চালককে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে দেড় ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর রাতে ২০-২৫ জন যুবক কুলতলায় বর্ষশেষের আনন্দে মেতেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ওই চার জন হাবড়া-বদর সড়কে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ লেখায় ব্যস্ত ছিলেন। বাকিরা সড়কের দু’দিকে দাঁড়িয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।
এলাকাটি পেরোনোর সময়ে গাড়িগুলি যাতে গতি কমিয়ে দেয়, সেই অনুরোধই গাড়ির চালকদের করা হচ্ছিল। কিন্তু তীব্র গতিতে আসা একটি মিনি ট্রাককে যুবকেরা হাত দেখিয়েও থামাতে পারেননি। গতিতে না কমিয়ে সেটি এগিয়ে গিয়ে রাহুল ও তাঁর বন্ধুদের ধাক্কা মেরে পালায়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই রাস্তা দিয়ে বরাবর বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চলে। যে মিনি ট্রাকটি চার জনকে ধাক্কা মারে, সেটি পরে চাকলা-বদর সড়কেও এক টোটোকে ধাক্কা মারে বলে তাঁদের দাবি। সেই ঘটনাতে আহত হন টোটোচালক।
রাহুল ও পিকলু ছাড়া জখম বাকি দুই যুবকের নাম মিঠুন ঘোষ ও সুমন ভট্ট। রাহুল হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। রাহুলের এক বোন আছে। তাঁর মা বিথীকা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘ছেলেরা সকলে আনন্দ করছিল। সেই আনন্দের শেষে যে এই ঘটবে, কে জানত! এখনও পুলিশ গাড়িটিকে ধরতে পারল না। গ্রেফতার করা গেল না চালককেও। শুনেছি, ওই রাস্তার কোথাও কোথাও সিসিটিভি রয়েছে। যদি সেগুলির মাধ্যমেও কিছু ব্যবস্থা করতে পারত পুলিশ।’’
প্রত্যক্ষদর্শী প্রণব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চালক সম্ভবত মদ্যপ ছিল। নতুন বছরের শুরুতেই এক বন্ধুকে হারালাম।’’