অবরোধ: হাবড়ায় যশোর রোডে। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
আশঙ্কা ছিল, বামেদের ডাকা হরতালে এত দিন পরে শুরু হতে চলা স্কুলগুলি খুলবে তো শুক্রবার? সে সমস্যা অবশ্য হয়নি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় স্কুল খোলায় কোথাও বাধা দেওয়ার অভিযোগ নেই। তবে দফায় রেল, সড়ক অবরোধের ফলে কোথাও কোথাও পড়ুয়াদের যাতায়াতে সমস্যা হয়েছে।
সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্ধ আশানুরূপ হয়েছে। যেহেতু ছাত্রেরা এবং এবিটিএ দাবি করেছিল স্কুল খোলার, তাই বন্ধের আওতা থেকে স্কুলগুলি বাদ রাখা হয়েছিল।’’
সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ি বলেন, ‘‘এ দিন যেহেতু প্রথম স্কুল খুলছে, তাই অনেক শিক্ষক প্রতিবাদ জানিয়ে কালো ব্যাজ পরে স্কুলে গিয়েছেন। অধিকাংশ স্কুলে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ছিল হাতে গোনা।’’
দফায় দফায় রাস্তা অবরোধের ফলে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল বাসন্তী হাইওয়েতে। ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় পথে নামেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। বামনঘাটা বাজারে মিছিল হয়। পরে বাসন্তী হাইওয়ের উপরে বসে পড়েন তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঘটকপুকুর বাজারেও মিছিল হয়েছে। পথ অবরোধ হয়। পুলিশ গিয়ে ধর্মঘট সমর্থনকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। ভাঙড়ের কাশীপুর থানার শ্যামনগর মোড়ে ধর্মঘটের সমর্থনে জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি লাউহাটি-হাড়োয়া রোড অবরোধ করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। সিপিএমের অভিযোগ, বামনঘাটায় মিছিল ও রাস্তা অবরোধ করতে বাধা দেয় পুলিশ। সেখানে বাম কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল ও অবরোধ করেন। যদিও পুলিশের দাবি, ওই সময়ে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে রাজ্যপালের কনভয় যাচ্ছিল। সে কারণে ওই সময়ের জন্য রাস্তা ফাঁকা করে দিতে অনুরোধ করা হয়।
এ বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘যে ভাবে নবান্ন অভিযানকে ঘিরে যুব সমাজের উপরে পুলিশ নির্মম ভাবে লাঠি চালাল, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন রাস্তায় নেমে ধর্মঘট সমর্থন করতে গেলে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়।’’
হাসনাবাদ থানার তালপুকুরে, বনবিবি সেতুর পাশের অটো স্ট্যান্ডের কাছে এবং রামেশ্বরপুরে বামেদের তরফে অবরোধ করা হয় সকালের দিকে। বিকেলে টাকিতে প্রতিবাদ মিছিল হয় বাম ও কংগ্রেসের তরফে। বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় বাম ও কংগ্রেসের বাইক মিছিল হয়েছে। পিঁফায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়। বোটঘাটে রাস্তা অবরোধ হয়। তবে শহরে অধিকাংশ দোকান, বাজার খোলা থাকতে দেখা যায়। বেলা ১১টা নাগাদ বসিরহাট স্টেশনে রেললাইনের উপরে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। কিছুক্ষণের জন্য বারাসাত-হাসনাবাদ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিয়ালদহগামী হাসনাবাদ লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে।
বাদুড়িয়ায় চৌরাস্তায় অবরোধ হয়। হাসনাবাদের তালপুকুর বাজার, টাকি এবং দেগঙ্গাতেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করেন।
ক্যানিং হাসপাতাল মোড়ে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ক্যানিং-বারুইপুর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বন্ধ সমর্থকেরা। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।