সতর্কবার্তা: খাঁড়িপথে ঝোলানো হয়েছে বিপদসঙ্কেতের বোর্ড। নিজস্ব চিত্র
জল-জঙ্গলকে সম্বল করে জীবন কাটান সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা। সেই জল-জঙ্গলই আবার কেড়ে নেয় তাঁদের জীবন। জীবিকার টানে জঙ্গলে গিয়ে যাতে বাঘের আক্রমণ থেকে সতর্ক থাকা যায়, সে জন্য পদক্ষেপ করল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। জঙ্গলের যে সব অঞ্চলে বাঘের হামলার আশঙ্কা বেশি, সেখানে বিপদসঙ্কেত বসানো হয়েছে বন দফতরের তরফে।
সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মৎস্যজীবী। গত রবিবারও ঝিলা ৫ নম্বর জঙ্গলে সন্ন্যাসী মণ্ডল নামে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয় বাঘের হানায়। মৎস্যজীবীদের বাঘের হামলা থেকে সতর্ক করতে ইতিমধ্যে বন দফতর নানা কৌশল নিয়েছে। এ বার জঙ্গলের বিপজ্জনক এলাকা চিহ্নিত করে বিপদসঙ্কেতের বোর্ড লাগানো হল।
হাতের কাজ, মৌমাছি চাষের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ, নার্সারি তৈরি-সহ নানা কাজের মাধ্যমে সুন্দরবনের মানুষের জন্য বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফেও একশো দিনের কাজ দেওয়া হয়। তবুও বাড়তি রোজগারের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে জঙ্গল-লাগোয়া খাঁড়িতে ঢোকেন অনেকে। বাঘের হামলার শিকার হন তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ। এঁদের সাবধান করতে ইতিমধ্যে সুন্দরবনের পিরখালি, ঝিলা-সহ যে সমস্ত জঙ্গলে বাঘের আনাগোনা বেশি, তার প্রবেশপথে বোর্ড ঝুলিয়েছে বন দফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোনস জাস্টিন বলেন, “বাঘে-মানুষে সংঘাত কমাতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু মানুষ বন দফতরের নিষেধ মানছেন না। এ বার বাঘের আস্তানার খাঁড়িপথগুলিতে আমরা বিপদসঙ্কেত লাগিয়েছি। যাতে এই সতর্কবার্তা দেখে মৎস্যজীবীরা ভিতরে না প্রবেশ করেন।”
তবে সকলে সতর্কবাণী মানবেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনাধিকারিক বলেন, “আমরা সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি এতে কোনও একজনেরও প্রাণ বাঁচে, সেটাই আমাদের সাফল্য।”