ব্যস্ত: কাজে মন দুই বান্ধবীর
স্কুল বন্ধ থাকায় অনলাইনে পড়াশোনা চলছে। কিন্তু সে জন্য ইন্টারনেট বাবদ মাসে মাসে খরচ হচ্ছে অনেক। পাশাপাশি রয়েছে টিউশনের খরচও। সে সব জোগাড় করতেই প্রতিমার অলঙ্কার তৈরির কাজে হাত দিয়েছে দেগঙ্গার বাসিন্দা দশম শ্রেণির ছাত্রী সোফিয়া খাতুন।
তার বন্ধু সুস্মিতার বাবা প্রতিমার অলঙ্কার তৈরির ব্যবসা আছে। অন্যবারের থেকে পুজোর আড়ম্বর এ বার অনেটটাই কম। তা-ও সুস্মিতাদের কাজ চলছে পুরোদস্তুর। সুস্মিতার উৎসাহেই বন্ধু সোফিয়া যোগ দিয়েছে সেই কাজে। লকডাউনে কার্যত বন্ধ ছিল অলঙ্কার তৈরির কাজ। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পক্ষে শারদীয়া উৎসব পালনে অনুমতি এবং আর্থিক সাহায্য মিলতেই নতুন করে উৎসাহ ফিরে পেয়েছেন দেগঙ্গার অলঙ্কার তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা। কাজও শুরু হয়েছে। খাড়ুয়া চাঁদপুরে সোফিয়া, সুস্মিতাদের গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, সুস্মিতার পাশে বসে অলঙ্কার তৈরিতে ব্যস্ত সোফিয়া। তার কথায়, ‘‘এখন স্কুল বন্ধ। বাবা দিনমজুরের কাজ করে যে টাকা উপার্জন করেন, তাতে সংসার চালিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ জোগাড় হয় না। তাই বান্ধবীর কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে অলঙ্কার তৈরির কাজ করছি।’’ হাজার তিন-চার টাকা আয়ও হচ্ছে তাতে। কাঁচামালের দাম বাড়লেও অলঙ্কারের বাজার দর বিশেষ বাড়েনি। ফলে লকডাউনের পর নতুন করে কাজ শুরু হলেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানালেন প্রতিমার অলঙ্কার তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা। তাঁরা জানান, এ বার অনেকেই ছোট মণ্ডপ ও ছোট প্রতিমা করে পুজো করছেন। ফলে অলঙ্কার সরঞ্জামের চাহিদাও খুব কম। স্থানীয় শিল্পী সঞ্জিত ব্যাপারী, সঞ্জয় সরকার, সুপর্ণা মণ্ডলরা বলেন, ‘‘গত বছরেও একটা বড় দুর্গা প্রতিমার অলঙ্কার সাজের সেট বিক্রি করে মিলত ৭-৮ হাজার টাকা। এ বার ছোট প্রতিমা হওয়ায় দেবীর সাজের দাম মিলছে বড় জোর দেড়-দু’হাজার টাকা। এই অবস্থায় মজুরির দাম তোলাই শক্ত। আর্থিক ক্ষতি এড়ানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’’ —নিজস্ব চিত্র