প্রতীকী ছবি।
দোকানের ভিতরে ঢুকে কর্মীদের ‘শাসাচ্ছেন’ এক প্রৌঢ়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কয়েক জন যুবক। সকলের মাথায় গেরুয়া কাপড় বাঁধা। বেশ কিছু ক্ষণ এমন চলার পরে দোকান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই ব্যক্তিদের মুখে শোনা গেল ধর্মীয় স্লোগান।
ঘটনাস্থল, উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুর মোড়ে একটি মোমোর দোকান। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। আর সেই বচসার ছবি রবিবার সকাল থেকে স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। যদিও এই বিষয়ে দোকানের তরফে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে ঘটনার পরে দোকানে এসেছিল খড়দহ থানার পুলিশ।
সোদপুর স্টেশন রোডে ওই মোমোর দোকানের কর্মীরা জানান, শনিবার রাতে আচমকাই কয়েক জনকে নিয়ে দোকানে এসে ঢোকেন ওই প্রৌঢ়। দেওয়ালে ঝোলানো মেনু কার্ডে কিছু লেখা থাকা নিয়ে আপত্তি তোলেন তিনি। স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ওই প্রৌঢ় শাসানির সুরে বলছেন, ‘‘এগুলো কেন লেখা হয়েছে? আগেও বারণ করে গিয়েছি। ভারতবর্ষের বুকে কেন এ সব লেখা হবে? এটা কি আরব? লিখতে হলে সব লিখতে হবে।’’ দোকানের কর্মীরা কিছু বোঝানোর চেষ্টা করতেই ওই প্রৌঢ় আরও ক্ষেপে গিয়ে বলতে শুরু করেন, ‘‘এটা ভারতবর্ষে থাকতে পারবে না। এ সব লিখে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। লিখতে হলে সব লিখতে হবে। সব ধরনের খদ্দের আসে। এ সব চলতে পারে না।’’
ভিডিয়োয় আরও দেখা যাচ্ছে, দোকানের কর্মীদের কথা বা যুক্তিকে কোনও আমল না দিয়ে ওই প্রৌঢ়ের সঙ্গে থাকা যুবকেরা দু’টি মেনুকার্ডের উপরে রং ছড়িয়ে তার উপরে কালো রং লেপে ধর্মীয় স্লোগান দিতে দিতে বেরিয়ে আসছেন। রবিবার ওই দোকানের এক আধিকারিক সোমেন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চার-পাঁচ মাস আগেও ওই প্রৌঢ় এসে এমন ঝামেলা করেছিলেন। তার পরে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ওই ঘটনার পরে এত দিন প্রৌঢ়কে এলাকায় দেখা যায়নি।’’
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি তাঁরাও খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়ার পোস্টটিও দেখা হচ্ছে। যাতে বোঝা যায়, কোন জায়গা থেকে কারা এমন কাজ করেছেন। তবে এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও কর্মী যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন উত্তর শহরতলি জেলার সাধারণ সম্পাদক চণ্ডীচরণ রায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দল কখনও এমন অনভিপ্রেত ঘটনাকে মান্যতা দেয় না। কিছু লোকজন ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের বদনাম করার জন্য এ সব শুরু করেছেন।’’