বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে গ্রামে। — নিজস্ব চিত্র।
টানা বৃষ্টি এবং কটালের জোড়া ফলায় বিদ্ধ সুন্দরবন। তার জেরে এলাকার নদী এবং সমুদ্রে ব্যাপক জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে। জলের তোড়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। জলমগ্ন হয়েছে সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা, বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি, রায়দিঘি এবং ডায়মন্ড হারবারের কিছু এলাকা।
শনিবার ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টির ফলে নামখানা ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকা মৌসুনি দ্বীপের সল্টঘেরিতে সমুদ্রবাঁধের প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় ধস নামে। যার ফলে রবিবার সকাল থেকে জলমগ্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। প্রায় ৫০টি পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রবিবার নামখানার নারায়ণপুর এলাকাতেও বাঁধ উপচে জল ঢুকতে শুরু করে। শনিবার বাসন্তী ব্লকের হোগল নদীর বাঁধ ভেঙেছিল। টানা বৃষ্টির জেরে রবিবারও স্থানীয় কালীমন্দির এলাকায় হোগল নদীর বাঁধে ধস নামে। নদীর জলে প্লাবিত হয় বাজার এবং রাধাবল্লভপুর কলোনি পাড়া। একই ছবি দেখা গিয়েছে সাগরদ্বীপেও। রবিবার সকাল থেকে কপিলমুনি মন্দির সংলগ্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বঙ্কিমনগর, কচুবেড়িয়া এবং চকফুলডুবি এলাকাতেও বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকতে শুরু করে। মুড়িগঙ্গায় বিশালাক্ষ্মী মন্দির সংলগ্ন এলাকার পাকা রাস্তাও ডুবে যায়। রবিবার রায়দিঘির কুমোরপাড়া এলাকায় মণি নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকা। পাথরপ্রতিমার ঘোড়াদল এলাকাতেও বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া কাকদ্বীপ এবং ডায়মন্ড হারবারের নদী তীরবর্তী বহু এলাকাই প্লাবিত হয়েছে।
জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে সরকারি স্কুল এবং আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। মহকুমা শাসকের দফতরে কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে৷ উপকূল এলাকাগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং উপকূলের পুলিশকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘অন্যান্য বিপর্যয়ের মতোই সব ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। দু’এক জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। তবে বড় কোনও বিপর্যয় ঘটেনি। আমরা সুন্দরবন এবং নদী তীরবর্তী এলাকার ফ্লাড শেল্টারগুলি প্রস্তুত রেখেছি।’’
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা জলমগ্ন এলাকার মানুষদের সরিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি। বৃষ্টির জন্য সেচ দফতরের কর্মীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। একটু বৃষ্টি থামলেই ভাঙা বাঁধ দ্রুত মেরামত করা হবে। আপাতত ভয়ের কোনও কারণ নেই।’’