ব্লক অফিসের সামনে পোস্টার লাগানো হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
কুইন্ট্যাল কুইন্ট্যাল মরা মুরগির কেনাবেচা চলছে বাদুড়িয়ায়। কোনও মুরগি মারা গিয়েছে রোগে ভুগে। কেউ দেহ রেখেছে ছোট্ট খামারে গরমে। অভিযোগ, ফর্ম্যালিন নামক রাসায়নিকে চুবিয়ে মরা মুরগির মাংস তাজা রাখছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। কম দামে তা বেচেছে কলকাতা ও শহরতলির হোটেল-রেস্তোরাঁয়।
বাদুড়িয়া পুরসভার খাদ্য ইন্সপেক্টর বাদুড়িয়া থানায় অভিযোগ করেছেন এ নিয়ে। ওই ইন্সপেক্টর তনয়কান্তি রায় জানান, মরা মুরগি বিষাক্ত রাসায়নিকে চুবিয়ে কলকাতা ও আশপাশের হোটেলে চালান করা হচ্ছে। এই কারবার বন্ধ করতে পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, সরাসরি এ দায়িত্ব তাদের নয়। খাদ্য দফতর অভিযানে গেলে তারা আইনি সহায়তা দিতে পারে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন এ নিয়ে ব্যবস্থা নেবে। আমাদের পক্ষেও নজর রাখা হবে, যাতে কেউ মরা মুরগি বিক্রি না করে।’’
রাসায়নিকে চোবানো মরা মুরগির কারবার বন্ধ করতে মঙ্গলবার বাদুড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়েছে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পুরপ্রধান তুষার সিংহের বক্তব্য, ‘‘এই কারবার চলতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বাদুড়িয়ায় ১০-১২ হাজারের বেশি পোলট্রি আছে। ক’মাস ধরে আনারপুর, মাথাভাঙা, আরসুলা, তারাগুনিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার কিছু পোলট্রি ব্যবসায়ী সস্তায় মরা মুরগি বেচছেন। ১৫-২০ টাকা কেজি দরে সেই মুরগি কিনে টুকরো করে থার্মোকলের বাক্সে বরফ ও ফর্ম্যালিন দিয়ে রাখা হচ্ছে। রাতে ওই সব বাক্স ট্রাকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে। প্রতি দিন বাদুড়িয়া থেকে ৫০০ কেজি মরা মুরগির মাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি সঞ্জয় দত্ত, মিজানুর রহমান, কবিরুল মণ্ডলদের বক্তব্য, ‘‘ফর্ম্যালিন মৃতদেহ টাটকা রাখতে ব্যবহার করা হয়। সেই রাসায়নিক দেওয়া হচ্ছে মুরগির মাংসে। না জেনে তা খেয়ে কত মানুষ বিপদ ডেকে আনছেন।’’