—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পঞ্চম অর্থ কমিশনের অর্থ বরাদ্দের জন্য পঞ্চায়েতগুলিতে সমীক্ষা চালায় রাজ্য। সাতটি বিষয়ের উপরে ভিত্তি করে পঞ্চায়েতের কাজ খতিয়ে দেখা হয়। সেই সাতটি কাজে সাফল্যের নিরিখে বরাদ্দ হয় উৎসাহ ভাতা। কিন্তু সমীক্ষায় ২৯ শতাংশ পঞ্চায়েতই ব্যর্থ হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ব্যর্থ ৬৬টি পঞ্চায়েত।
কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্য নগর পঞ্চায়েত কেন্দ্রীয় সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের বিচারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রাজ্যে প্রথম ও দেশে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল। দিল্লিতে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের পুরস্কৃতও করেন রাষ্ট্রপতি। এই পঞ্চায়েতও নবান্নের সমীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। সূত্রের খবর, নিজস্ব আয় বাড়াতে না পারাই তার কারণে। পঞ্চায়েত প্রধান সুচিত্রা জানা প্রামাণিক বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর কর সংগ্রহের পরিমাণ কম থাকায় আমরা উত্তীর্ণ হতে পারিনি। এখন থেকেই চেষ্টা করছি, পরের বার যাতে পঞ্চায়েত অর্থ পায়।”
বাসন্তী ব্লকের পাঁচটি পঞ্চায়েত, ক্যানিং ১ ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত, ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েত, মগরাহাট ১ ব্লকের একটি পঞ্চায়েত, সাগরের তিনটি পঞ্চায়েত-সহ জেলার আরও বেশ কিছু পঞ্চায়েত মূল্যমান পূরণ করতে পারেনি।
নিজস্ব আয়ের সংস্থান, পঞ্চায়েত উন্নয়ন পরিকল্পনা, তহবিলের অন্তত ৫৫ শতাংশ টাকা খরচ, টেন্ডারের অন্তত ৭০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করা-সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর এই সমীক্ষা চলে। গত বছরের মাঝামাঝি সেই কাজ শুরু হয়েছিল। চলেছে কয়েক মাস ধরে। কয়েক দিন আগে সেই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে পঞ্চায়েত দফতর।
সাতটি মাপকাঠিতে সফল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৪৪টি পঞ্চায়েতের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। জেলার মধ্যে সর্বাধিক বরাদ্দ পেয়েছে ক্যানিংয়ের বানসারা পঞ্চায়েত। তারা পেয়েছে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। তালদি পঞ্চায়েত পেয়েছে ২৮ লক্ষ টাকা। সর্বনিম্ন বরাদ্দ হয়েছে সোনারপুরের পোলঘাট পঞ্চায়েতে। তারা ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পেয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০২১ সালে পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশন গঠন করা হয়। গত বারের তুলনায় এ বার অর্থ বরাদ্দ বেশি। কেন্দ্র একশো দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা প্রকল্পে টাকা বন্ধ করেছে। রাস্তা তৈরির কাজও কার্যত হচ্ছে না। ফলে পঞ্চায়েতের হাতে কাজ নেই বললেই চলে। এই অবস্থায় রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকা হাতে আসায় পঞ্চায়েতগুলির খরা কিছুটা কাটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের মতো রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকাও দেওয়া হয়েছে ‘টায়েড’ (শর্তাধীন) ও ‘আনটায়েড’ (নিঃশর্ত) খাতে। মূলত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নিকাশি এবং রাস্তা তৈরিতে এই টাকা খরচ করতে হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সৌমেন পাল বলেন, “জেলার যে পঞ্চায়েতগুলি নবান্নের সমীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারল না, তাদের নিয়ে ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা হয়েছে। সামনের বছর যাতে জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত পাস করতে পারে, সেই লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে।”