উদ্ধার হওয়া বোমাভর্তি সাতটি ব্যাগ। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অশান্তির আবহের মাঝেই ভাঙড় থেকে উদ্ধার তাজা বোমাভর্তি সাত সাতটি ব্যাগ। ভাঙড় থানার পাশে একটি ভাঙা বাড়ি থেকে বোমাভর্তি এই ব্যাগগুলি উদ্ধার হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। স্থানীয়েরা মনে করছেন, বৃহস্পতিবার এলাকায় মুড়িমুড়কির মতো যে বোমা ফাটানো হয়েছে, সেগুলি এই উদ্ধার হওয়া বোমাগুলিরই একাংশ। বোমাবাজির সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীরাই বোমাগুলি এনে ওই ভাঙা বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল বলেও মনে করছেন স্থানীয়েরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বোমাভর্তি ওই সাতটি ব্যাগ প্রথমে এক গ্রামবাসীর নজরে আসে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ভাঙড় থানার পুলিশ। বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করার জন্য ইতিমধ্যেই সিআইডির বম্ব স্কোয়াডকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে অশান্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। অশান্তির জেরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত খবরের শিরোনামে থেকেছে সেই এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে প্রতি দিনই বোমাবাজি, গুলি, ইটবৃষ্টি, পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ভাঙড়। যার জেরে বেশ কয়েক দিন ধরে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। তৈরি হয়েছিল আতঙ্কের বাতাবরণ। বন্ধ ছিল দোকানপাট থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য। রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন এলাকার সাধারণ মানুষ। ভাঙড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনেও উত্তেজনা ছড়ায়। বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনেও পুলিশের সামনেই অবাধে সন্ত্রাস চলেছে। অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে চলেছে গুলি এবং বোমা। স্থানীয়দের দাবি, রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত তিন জনের প্রাণ গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) কর্মী, অন্য দু’জন শাসক তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করেনি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, সেখানেও মৃত্যুর উল্লেখ নেই।
সূত্রের খবর, এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার ভাঙড়ের পথে রওনা হয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার নিজের পূর্বনির্ধারিত সব কর্মসূচি বাতিল করেছেন রাজ্যপাল।