প্রতিবাদ: সোচ্চার প্রধান, উপপ্রধানেরা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
দেগঙ্গায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এখনও আমুলিয়া পঞ্চায়েতের উপসমিতি ও সঞ্চালক গঠন হয়নি। ফল ভুগতে হচ্ছে স্থানীয় সমস্ত মানুষকে। বন্ধ উন্নয়ন ও সমস্ত পরিষেবা। ব্যাহত হচ্ছে প্রতিদিনের কাজকর্ম।
বুধবার সঞ্চালক ও উপসমিতি গঠনের দাবিতে দলীয় পতাকা নিয়ে দেগঙ্গা বিডিও দফতরের মূল গেট আটকে বিক্ষোভে নামেন পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান। যোগ দেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরাও।
প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে ১৮ টির মধ্যে ১৬টি আসন পায় তৃণমূল। ১টি করে আসন পায় সিপিএম ও নির্দল। প্রধান গঠনের দিন তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা হয় দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডলের উপরে।
দুই গোষ্ঠীর সমান সমান ভোট পাওয়ায় টসে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হন। রহিমা গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মাসকুরা বিবি প্রধান হন। উপপ্রধান হন জিলহাজ বেগম। কিন্তু অভিযোগ, গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে এক বছর কেটে গেলেও প্রধানের চেয়ারে বসে কাজ করতে পারছেন না প্রধান। পরিষেবা নিতে এসে বাসিন্দাদেরও ফিরে যেতে হচ্ছে। তার কারণ, পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজ করতে গেলে উপসমিতি ও সঞ্চালকের সম্মতি দরকার। এক বছর পার হয়ে গেলেও সে সব গঠন হয়নি।
ইতিমধ্যে চাঁদপুর, দক্ষিণ আমুলিয়া এলাকায় জ্বর ছড়িয়েছে। বছর দু’য়েক আগে ডেঙ্গিতে অনেকে মারা যান। এ বছরও অনেকে জ্বরে ভুগছেন। কিন্তু মশার দাপট রুখতে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। তাসলিমা বিবি নামে স্থানীয় এক মহিলা বলেন, “জ্বর বাড়লেও গ্রামে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না। নিকাশি নালা আবর্জনায় ভরেছে। চুন-ব্লিচিং ছড়ানো নিয়ে প্রধানকে জানালেও তিনি বলছেন, আমি জানি না।’’ কামিরুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দার কথায়, “জবকার্ডের জন্য পঞ্চায়েত গেলেও জানানো হচ্ছে, কাজ বন্ধ। কিন্তু কেন, তার উত্তর মিলছে না।’’ এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপপ্রধান থেকে কী লাভ, প্রশ্ন গ্রামের বহু মানুষের।
বুধবার দলীয় পতাকা হাতে প্রধান ও উপপ্রধান বিক্ষোভ দেখান দেগঙ্গা বিডিও দফতরের মূল গেট আটকে। মাসকুরা বলেন, “প্রধানের চেয়ারে বসে আছি এক বছর হয়ে গেল। অথচ, মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি না উপসমতি গঠন না হওয়ায়। কেন এক বছরে উপসমিতি গঠন করা গেল না, তার ব্যবস্থা বিডিওকে করতে হবে।’’ জিলহারা বলেন, “সরকারি নিয়মে উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছিল। সেই চেয়ারে বসেও যদি কাজ করতে না পারি, তা হলে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁরা কী বলবেন? তাঁদের পরিষেবা কেড়ে নেওয়ার অধিকার আমাদের কি আছে?’’
আমুলিয়ার তৃণমূল নেতা সহিদুল আকুঞ্জি বলেন, “এক বছর প্রধান গঠন হলেও পরিষেবা দিতে না পারায় মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে মানুষের জন্য কাজ করতে বলছেন, সেখানে কেন বন্ধ রয়েছে আমুলিয়া পঞ্চায়েতের পরিষেবা। অবিলম্বে বিডিওকে উদ্যোগ করতে হবে।’’
দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, “বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে সমস্ত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’