চালু করা হচ্ছে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর। প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গির মরসুমে বিধাননগর পুর এলাকার মাতৃসদনে তৈরি রাখা হচ্ছে পৃথক শয্যা। চালু করা হচ্ছে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ওই হেল্পলাইন নম্বরটি চালু হওয়ার কথা। আবর্জনা ও জমা জল পরিষ্কার না করায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাড়িতে নোটিসও দিয়েছে পুরসভা।
বিধাননগরে ডেঙ্গির প্রকোপ সব চেয়ে বেশি বলে সম্প্রতি দাবি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। ডেঙ্গির আক্রমণ ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ধরিয়েছে শহরবাসীর মনে। কলকাতায় পর পর ডেঙ্গি-মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে। বিধাননগর পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে এখনও প্রাণহানি না হলেও, আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে তিনশো ছুঁইছুঁই। সব মিলিয়ে উদ্বিগ্ন পুর প্রশাসনও।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকায় বিধাননগর মাতৃসদন, দেশবন্ধুনগর মাতৃসদন এবং নারায়ণপুর মাতৃসদনে ২০টি করে শয্যা ডেঙ্গি রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হচ্ছে। যাতে জরুরি অবস্থায় কোনও রোগীর মাতৃসদনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘কোভিডের সময়ে ওই সব মাতৃসদনে সেফ হোম খোলা হয়েছিল। এখন ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় সেখানে শয্যা তৈরি রাখা হবে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিধাননগর পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২১ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত সপ্তাহের আগে পর্যন্ত আরও ১৮৫ জন পুর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গিতে সংক্রমিত হয়েছেন। বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, মাতৃসদনগুলিতে শয্যা তৈরি রাখার পাশাপাশি প্রতিদিন পুর এলাকায় ডেঙ্গির বিরুদ্ধে সচেতনতার নিরন্তর প্রচার চলছে। যে সব জায়গা থেকে বেশি আক্রান্তের খবর আসছে, সেখানে ফিভার ক্যাম্পেরও আয়োজন করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ডেঙ্গির মোকাবিলায় জমা জল ও আবর্জনা দেখতে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ড্রোন ওড়ানো হয়েছিল। ছবিতে দেখা গিয়েছে, ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাড়ির ছাদের বাগানে জল ও আবর্জনা জমে রয়েছে। সেখানে ডেঙ্গি মশার লার্ভাও মিলেছে। ৪০ নম্বর ওয়ার্ডেও একাধিক বাড়িতে মিলেছে ডেঙ্গি মশার লার্ভা। সল্টলেকে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে বসতি নেই। সেই সব জায়গায় কর্মসূত্রে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। যেমন, সল্টলেকের অফিসপাড়া করুণাময়ী ও বিকাশ ভবন চত্বরের সরকারি অফিসগুলির পিছনে আবর্জনা জমে থাকে। সল্টলেক ও রাজারহাটের থানাগুলিতে পরিত্যক্ত গাড়িতেও বৃষ্টির জমা জলে মশার লার্ভা মিলেছে। সম্প্রতি বাগুইআটি, বিধাননগর দক্ষিণ ও উত্তর থানায় ডেঙ্গি মশার লার্ভা পেয়েও পরিস্থিতির বদল হয়নি।
পুরসভা সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হচ্ছে। এক পুর আধিকারিক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতর থেকে আক্রান্ত রোগীর তথ্য ওই নম্বরের মাধ্যমে তাঁর বাড়িতে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে জ্বর হলেও ওই নম্বরে ফোন করলে যে কোনও রকম সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ।