অনুসন্ধান: বাঘের খোঁজে ইকনা। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন পরে ফের লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়াল সুন্দরবনে।
মঙ্গলবার সকালে গোসাবা ব্লকের ছোট মোল্লাখালি পঞ্চায়েতের হেতালবাড়িতে নদীর পাড়ে ম্যানগ্রোভের ঝোপঝাড়-লাগোয়া এলাকায় বাঘের অনেকগুলি পায়ের ছাপ দেখতে পান স্থানীয় মানুষ। খবর পেয়ে বাগনা রেঞ্জের বনকর্মীরা আসেন। গ্রাম-লাগোয়া ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে খোঁজাখুঁজি চালিয়েও অবশ্য বাঘের দেখা মেলেনি। দুপুরের পরে বিশেষ তালিমপ্রাপ্ত কুকুর ‘ইকনা’কে আনা হয় বাঘের খোঁজে। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা মেলেনি দক্ষিণরায়ের।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সুন্দরবনের ঝিলা ৩ নম্বর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ গাঁড়াল নদী সাঁতরে হেঁতালবাড়িতে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। বাঘটি এখনও গ্রামের দিকের ম্যানগ্রোভের ঝোপের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বলে বন দফতরের প্রাথমিক অনুমান। ম্যানগ্রোভের ঝোপের আশপাশে পায়ের প্রচুর ছাপ মিলেছে। উল্টো দিকের জঙ্গল থেকে নদীতে নামার পায়ের ছাপও দেখেছেন বনকর্মীরা। তবে জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার মতো পায়ের ছাপ দেখা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সুবোধ সর্দার, নমিতা মণ্ডলরা জানান, অনেক দিন এমন ঘটনা ঘটেনি। আগে গ্রামে নিয়মিত বাঘ ঢুকত। তা-ও আট-দশ বছর আগের ঘটনা। এতদিন পরে বাঘের আতঙ্ক ফিরে এল।
বন দফতর জানায়, বছর কয়েক আগে জঙ্গলের বাঘ ও অন্যান্য জন্তুদের লোকালয়ে প্রবেশ আটকাতে নাইলনের জালের উচ্চতা ৬ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১০ ফুট করা হয়। তারপর থেকে কার্যত লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি ইয়াস ও আমপানে সুন্দরবনের নাইলনের বেড়া বহু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন দফতর সেগুলি প্রায় সর্বত্র মেরামত করে ফেললেও কোথাও কোনও ফাঁকফোঁকর পেরিয়ে বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আপাতত এলাকায় রাতপাহারার ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। নদীবক্ষেও লঞ্চে টহলদারি চলছে। গ্রামের দিকে পটকা ফাটিয়ে বাঘকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস বলেন, ‘‘একটি বাঘের পায়ের ছাপ লোকালয়ের দিকে ম্যানগ্রোভের ঝোপের আশপাশে দেখা গিয়েছে। আমরা খোঁজাখুঁজি করছি। রাতেও নজরদারি চলছে। যাতে কোনও ভাবেই বাঘটি লোকালয়ে ঢুকে না পড়ে, সেই চেষ্টা চলছে।”