ব্যস্ত: কাজে লাগাতে হয়েছে ওদের। নিজস্ব চিত্র
স্কুল নেই। পড়াশোনা কার্যত বন্ধ। গরিব পরিবারের স্কুল পড়ুয়া বহু শিশুই তাই লেগে পড়েছে অর্থ উপার্জনে। সম্প্রতি দেগঙ্গায় গিয়ে দেখা গেল, নার্সারিতে কাজে ব্যস্ত বারো-চোদ্দো বছরের বহু শিশু। তাদের অধিকাংশই জানায়, পড়াশোনা বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে না থেকে বাড়তি আয়ের আশায় কাজে যোগ দিয়েছে।
এ রাজ্যের আপেল, কুল, জামরুল এবং পেয়ারার কদর এবং চাহিদা বেড়েছে। ওই সব গাছের চারা মূলত ভিন রাজ্যে পাঠানো হয়। দেগঙ্গা এবং বসিরহাট থেকে প্রতি বছর এ রকম কয়েক লক্ষ চারা পাড়ি দেয় গুজরাত, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশে। সেই চারা বিক্রি করে মোটা টাকা উপার্জন করছেন নার্সারি মালিকেরা। এই সব নার্সারিতেই বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন পড়ছে শিশুদের।
দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েত সংলগ্ন রাস্তার পাশে এমনই চারা তৈরির নার্সারি রয়েছে। নার্সারির মালিক চাকলার রায়খোলা গ্রামের জব্বার আলি মণ্ডল বলেন, “বসিরহাট এবং দেগঙ্গায় এমন বিশ-পঞ্চাশটি নার্সারি আছে, যেখানে শিশুরা কাজ করে। স্কুল বন্ধ তাই টাকা উপার্জন করতে কাজে যোগ দিয়েছে শিশুরা। চার হাজার পলি-প্যাকেটে মাটি ভরতে পারলে আটশো টাকা মজুরি পায়।” নার্সারিতে দেখা গেল অনেক শিশুই প্লাস্টিকের ব্যাগে মাটি ভরার কাজ করছে। তাদেরই একজন রায়পুরের সিরাজপুর প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাহিন বিল্লা বলে, “স্কুল বন্ধ। তাই বাড়িতে বসে না থেকে বাবা, মায়ের কথায় কাজে যোগ দিয়েছি।”
কাজে ব্যস্ত কুঁচেমোড়া প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নাজিমুল মণ্ডল, বসিরহাটের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র স্বপন দাস, চাকলা রায়খোলা হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আরিফ বিল্লারা জানায়, পড়াশোনা নেই। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। এখানে মাটি ভরার কাজে টাকা মিলছে জানতে পেরে কাজে যোগ দিয়েছে তারা।