নিজে-হাতে: শশাডাঙা এফপি স্কুলে তোলা হচ্ছে আনাজ। নিজস্ব চিত্র
মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে গত বছর নভেম্বর মাসে স্কুল চত্বরে আনাজ চাষ শুরু করেছিলেন শিক্ষকেরা। সেই কাজে যুক্ত করা হয়েছিল পড়ুয়াদের। গাইঘাটার শশাডাঙা এফপি স্কুলে দু’মাসের মধ্যে সেই আনাজ খেত এখন ভরে উঠেছে। বিন, ওল কপি, পালংশাক, মুলো, বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, গাজর ফলেছে। দিন কয়েক আগে সেই আনাজ দিয়ে মিড ডে মিলে রান্নাও শুরু হয়েছে।
শিক্ষা দফতরের গাইঘাটা চক্রের এসআই মনোজ মণ্ডল ওইদিন স্কুলে এসেছিলেন। তিনিই খেত থেকে প্রথম আনাজ তোলেন। স্কুলে চাষ করা আনাজের তরকারি খেতে পড়ুয়াদের মধ্যে উৎসাহ ছিল। ছাত্রছাত্রীরা জানায়, নিজেদের হাতে তৈরি ফলনে স্বাদই যেন আলাদা। পড়ুয়াদের মধ্যে উৎসাহ দেখে স্বস্তি পাচ্ছেন শিক্ষকেরা। তাদের পাতে পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দেওয়াটাই লক্ষ্য ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের।
স্কুল সূত্রে জানা গেল, আনাজ চাষ করার জন্য রাজস্থান থেকে কিনে আনা হয়েছে ব্রাশ কাটার এবং মিনি টিলার মেশিন। এই মেশিন দিয়ে এক সঙ্গে খেত প্রস্তুত করা, খেত পরিচর্যা-সহ চাষের পাঁচটি কাজ করা যায়।
স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৩০ জন। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মিড ডে মিলের রান্না ১০০ শতাংশ পড়ুয়া খায়। প্রধান শিক্ষক বাবুলাল সরকার বলেন, ‘‘স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা ৯ জন। প্রত্যেকে চাষের মেশিনটি কেনার জন্য অর্থ সাহায্য করেছেন।’’
নতুন কেনা মেশিন দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিজেই খেত প্রস্তুত করেন। চাষের কাজে তাঁকে সাহায্য করছেন প্রদীপ মণ্ডল, গৌতম রায়, দীপঙ্কর মণ্ডল নামে তিন শিক্ষক। কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়নি। গোবর সার এবং স্কুলে তৈরি পচনশীল জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি সার ব্যবহার হচ্ছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, জিনিসপত্রের যা দাম বেড়েছে, তাতে ঠিকঠাক মিড ডে মিল দেওয়ার জন্য নিজেদের এই আনাজ খেত খুবই কাজে আসবে। দরিদ্র পরিবারের অনেক পড়ুয়াই বাড়িতে ভাল পুষ্টিকর খাবার পায় না। স্কুলের আনাজ চাষ তাদের পুষ্টিকর খাবারের জোগান দিতে সাহায্য করবে। মাঝেমধ্যে শিক্ষকেরা নিজেরা টাকা দিয়ে পড়ুয়াদের মুরগির মাংসও খাওয়ান বলে জানা গেল।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, মরসুমে প্রায় দু’মাস সকলকে এই আনাজ খাওয়াতে পারব। শুধু আলু কিনতে হবে।’’