ঘণ্টাখানেক ডুবরি দিয়ে তল্লাশির পর পাওয়া যায় এই করাতটি। —নিজস্ব চিত্র।
দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে তাঁর প্রেমিক আফতাব পুনাওয়ালা খুন করে দেহ ৩৫ টুকরো করেছিলেন। একই কায়দায় এ রাজ্যের বারুইপুরে প্রাক্তন নৌ সেনাকর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে খুন করা হয়েছে। খুন করার পর তাঁর দেহ ছয় টুকরো করার অভিযোগ উঠল উজ্জ্বলের স্ত্রী শ্যামলী চক্রবর্তী এবং ছেলে জয়ের বিরুদ্ধে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, উজ্জ্বলকে খুন করে তাঁর দেহ শ্যামলী এবং জয় টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়েছিলেন বাড়ির কাছাকাছি একটি পুকুরে। যে অস্ত্র দিয়ে উজ্জ্বলের দেহ খণ্ড খণ্ড করা হয়, সেই করাতটিও পাওয়া গিয়েছে ওই পুকুর থেকেই।
সোমবার ডুবুরি দিয়ে বারুইপুরের ওই পুকুরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ঘণ্টাখানেকের তল্লাশি শেষে পুকুর থেকে পাওয়া যায় করাতটি। মৃতের স্ত্রী-পুত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্বাসরোধ করে খুনের পর ওই করাত দিয়েই উজ্জ্বলের দেহ টুকরো টুকরো করেছিলেন জয়।
উজ্জ্বলের কাটা হাত দু’টিরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। বারুইপুর-মল্লিকপুর রোডের ডিহি মাদল মল্লো এলাকার ওই পুকুর থেকে কিছুটা দূরে একটি জঙ্গলে উজ্জ্বলের দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়। আগে ওই জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর শরীরের নিম্নাংশ। শিয়ালের গর্তের কাছ থেকেই পাওয়া গিয়েছিল খণ্ডাংশ। মনে করা হচ্ছে, শিয়াল গর্তে টেনে নিয়ে গিয়েছে উজ্জ্বলের কাটা হাতের অংশ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রয়োজনে শিয়ালের গর্তেও তল্লাশি চালানো হবে।
এই খুনের ঘটনায় চার্জশিট জমা দেওয়ার তোড়জোড় চালাছে পুলিশ। তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে সোমবারই বারুইপুরে এসেছিলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত। বারুইপুর পুলিশ জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি খুনের ঘটনার খুঁটিনাটি জানতে চান তিনি। এ নিয়ে বারুইপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘অভিযুক্ত জয় চক্রবর্তীকে জেরা করে জানা গিয়েছে, করাত দিয়েই দেহ ছয় টুকরো করেছিলেন বাবার দেহ। সেই মতো অস্ত্রের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। অবশেষে সেটি পাওয়া গিয়েছে। তবে এখনও সব দেহাংশ উদ্ধার হয়নি। তার জন্য তল্লাশি চলছে। এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছেন কি না, তা জানতে ধৃতদের ফোনের কল লিস্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’