রাস্তার হাল ফিরবে কবে, প্রশ্ন গারুলিয়ার বধূদের

রান্নাঘরে রান্না করতে করতে ননদ-বৌদির মধ্যে চলছে রাজনৈতিক আলোচনা। আবার কোথাও মশলা বাটতে বাটতে শাশুড়িকে পাড়ার খবর শোনাচ্ছেন বউমা। কাকে ভোট দেবেন, সে নিয়ে বেশ সচেতন তাঁরা। ঘর সামলাতে সামলাতে এলাকার উন্নয়ন নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করছেন গারুলিয়া পুরসভার গৃহবধূরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গারুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩২
Share:

রান্নাঘরে রান্না করতে করতে ননদ-বৌদির মধ্যে চলছে রাজনৈতিক আলোচনা। আবার কোথাও মশলা বাটতে বাটতে শাশুড়িকে পাড়ার খবর শোনাচ্ছেন বউমা। কাকে ভোট দেবেন, সে নিয়ে বেশ সচেতন তাঁরা। ঘর সামলাতে সামলাতে এলাকার উন্নয়ন নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করছেন গারুলিয়া পুরসভার গৃহবধূরা।

Advertisement

২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বৈশাখী হাজরা ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে যাচ্ছিলেন। তাড়াহুড়ো করে বললেন, ‘‘এলাকার অনেক কিছুই ভাল। কিন্তু রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ যে অনেক সময়ে রিকশাও যেতে চায় না। সে কারণে একটু তাড়াতাড়ি বেরনোর চেষ্টা করি। রাস্তায় আলো আছে, কিন্তু মাঝে মধ্যেই তা খারাপ হয়ে যায়। তাই রাতে কোথাও বেরোলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার চেষ্টা করি। নিকাশি ব্যবস্থার আরও উন্নতি দরকার।’’

৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোমা ভট্টাচার্য ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ভোটের ব্যাপারে কথা বলতে দিব্যি আগ্রহী। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় সমস্যা তো রয়েছেই। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভাল নয়। নিকাশি ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ।’’ জানালেন, নিকাশি ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় এলাকায় মশার উৎপাত দিন দিন বাড়ছে। মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত নানা রকম পরিকল্পনা নেওয়া উচিত পুরসভার, মনে করেন তিনি। আগে পুরসভা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশির ওষুধ বাড়ি বাড়ি দেওয়া হত। কিন্তু এখন তা আর দেওয়া হয় না, বললেন ওই গৃহবধূ। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নমিতা সেনগুপ্ত দুপুরবেলায় অসুস্থ স্বামীকে খাওয়াচ্ছিলেন। এর মধ্যেও এলাকার উন্নয়ন সম্পর্কে সচেতন নমিতাদেবী। বললেন, ‘‘কর্ম সংস্থানের অভাব রয়েছে। এখনকার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শিখছে। এলাকায় কর্মসংস্থান হলে সকলের উপকার হবে।’’ স্বামী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তাঁর পরিবারের অবস্থাও খুব খরাপ। এই সময় একটি কাজের সন্ধানে তিনিও। যে-ই জিতুন তাঁর কাছে নমিতাদেবীর আর্জি, বিপদে কাউন্সিলরকে যেন পাশে পাওয়া যায়। এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হওয়া দরকার। কারণ বর্ষার সময়ে জল অনেক দেরি করে নামে। এখানকার ড্রেনের অবস্থাও ভাল নয়। এলাকায় মশার উৎপাত কমানোর জন্য ব্লিচিং পাউডার এবং মশা মারার তেল বেশি করে দেওয়া উচিত। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সন্ধ্যা পাল সরু পীচ ওঠা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। দেখা হতেই বললেন, ‘‘রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। যে-ই জিতুন, আগে বলব আমাদের এলাকার রাস্তা ঠিক করতে। তা ছাড়া, আমার মনে হয় এলাকায় মহিলাদের নিরাপত্তা বাড়ানো উচিত।’’ রাতের বেলা বাড়ি ফিরতে এখনও ভয় পান এই বধূটি। তাঁর মনে হয়, এত দিনে এলাকার উন্নয়ন অনেক হয়েছে, তবে মহিলা নিরাপত্তার ঘাটতি থেকেই গিয়েছে।

Advertisement

একই সুরে বললেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আল্পনা বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও সন্ধ্যার পরে রাস্তায় বেরতে ভয় পাই।’’ তবে এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আগের থেকে এলাকার এখন অনেক ভাল অবস্থা। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা শুধরোয়নি। সে দিকে নজর দিলে ভাল।’’ তা ছাড়া, এখানে ঝুপড়ি রয়েছে অনেক। সেগুলি যদি পাকা ঘর করে দেওয়া হয়, তা হলে একদিকে যেমন বহু অসহায় মানুষ উপকৃত হবেন, তেমনই এলাকার সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement