আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ। —ফাইল চিত্র
বনগাঁয় শারদ উৎসব মানেই সাহিত্য পত্রিকা বা লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশেরও উৎসব। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে অনেক বছর ধরেই এখানে পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়। এ বার বেশ কিছু পত্রিকায় স্থান করে নিয়েছে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা। গল্প-কবিতা, সম্পাদকীয় কলামে তুলে ধরা হয়েছে আর জি কর হাসপাতালের প্রসঙ্গ। কয়েকটি পত্রিকার প্রচ্ছদেও ফুটে উঠেছে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা।
বনগাঁর উল্লেখযোগ্য শারদ সাহিত্য পত্রিকা, রোপণ। এ বার তারা ৩৩ তম সংখ্যা প্রকাশ করেছে। ১৩৬ পাতার পত্রিকার শুরুতেই দু’টি পাতা জুড়ে আর জি কর নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান ছাপা হয়েছে। শুরুতে লেখা, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর।’ লেখা হয়েছে, ‘‘ওই যে শোনো জাগছে মানুষ/ পথে প্রতিবাদের ঘোর/ তিলোত্তমা দিব্যি তোমার/ আনবো মোরা নতুন ভোর।’’ সম্পাদক বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘‘মহিলাদের রাতদখলের আন্দোলন সারা রাজ্য জুড়ে। কারণ একটাই। সমস্ত স্তরে নারীনিগ্রহ ও ধর্ষণ সংস্কৃতির অবসান চায়।’’ পত্রিকায় জায়গা পেয়েছে প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ, কবিতা, উপন্যাস, রম্যরচনা, চিঠি।
অন্বেষা সাহিত্য পত্রিকা এ বার ৩৩ বছরে পড়েছে। ৩২০ পাতার পত্রিকার এ বার মূল বিষয়বস্তু, জল-সঙ্কট। পত্রিকার শুরুতে একটি পাতায় মোমবাতির ছবি দিয়ে নীচে লেখা হয়েছে, ‘‘আর জি কর, হাথরাস, উন্নাও, কাঠুয়া, কামদুনি সহ নির্যাতিত মানুষের বিচারের দাবিতে।’’ মোমবাতির উপরে লেখা, ‘‘ফিরবে না তা জানি। তবু তোমার পথ চেয়ে জ্বলুক প্রদীপখানি।" প্রবন্ধ, কবিতা, ছোটগল্প, নাটক, শ্রুতিনাটক, ভ্রমণ কাহিনী দিয়ে সাজানো হয়েছে শারদ সংখ্যা।
বনগাঁ ল’ক্লার্কস ফোরামের সাহিত্য পত্রিকা এ বার দশ বছরে পড়ল। ৭২ পাতার পত্রিকায় জায়গা পেয়েছে আর জি কর হাসপাতাল প্রসঙ্গ। সম্পাদক মহিবুল সিদ্দিকী তাঁর কলামে তুলে এনেছেন এই প্রসঙ্গ। আমলাপাড়া অ্যাথলেটিক ক্লাবে স্মরণিকা সৈকত ১০৪ পাতার পত্রিকা। সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, "পথই পথ। দুর্গা এ বার পথে। হাতে খড়্গ। যে সকালে আলো নেই, তা রাতের চেয়েও কালো। যে রাত আসুরিক, শয়তানের অট্টহাসির মতো, তারই নাম অসুর।" অভিযান সঙ্ঘের শারদ স্মরণিকা অভিযান। এটিকেও সাহিত্য পত্রিকা বলা চলে। ৮০ পাতার পত্রিকা কবিতা, গল্প, নিবন্ধে সাজানো হয়েছে। যুগ্ম সম্পাদক জলধি হালদার এবং প্রদীপ্ত হালদার সম্পাদকীয় কলামে লিখেছেন, "এমন বিষণ্ণ আগমনী কখনও আসেনি আগে।"
বনগাঁর কবিদের লেখনীতেও ফুটে উঠেছে আর জি কর প্রসঙ্গ। পার্থ দে লিখেছেন, "কত কথা তোকে নিয়ে/ অনেক অনেক ব্যথার পার্বণ/ একটু তাকিয়ে দ্যাখ/ বন্ধুরা আজ বসে আছে/ মিছিল খুৃঁজছে মানুষেরা...। কান্তিময় ভট্টাচার্য লিখেছেন, "ও মেয়ে, লড়াই হোক ঘরে ও বাইরে জনপদে নির্ভীক সাহসিকতায়...।’’ বিভাস রায়চৌধুরী লিখেছেন, "অবশেষে দেখি ঘন জঙ্গলের কাছে/ রক্তমাখা এক নারী ধ্বস্ত পড়ে আছে...।’’