—প্রতীকী চিত্র।
বেশ কিছু দিন আগে শহরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে গোবরডাঙা পুরসভার পক্ষ থেকে এলাকায় বসানো হয়েছিল সিসি ক্যামেরা। অভিযোগ, উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেকগুলি সিসি ক্যামেরা দীর্ঘ দিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খুন এবং নির্যাতনের ঘটনার পরে গোবরডাঙার মানুষ দাবি তুলেছেন অবিলম্বে এলাকায় বসানো সমস্ত সিসি ক্যামেরা মেরামত করে চালু করার।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং নিগ্রহের ঘটনার প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করা হয়েছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে। পুলিশের ভূমিকাতেও নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের শীর্ষ স্তর থেকে থানা, ট্র্যাফিক গার্ড সহ সমস্ত পুলিশ কর্মীর উদ্দেশ্যে ১৫ দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে সম্প্রতি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যেখানে যেখানে সম্ভব সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। এ বিষয়ে যা যা প্রয়োজন তা পুলিশের সিসি ক্যামেরা সেলে জানাতে হবে। সাধারণ মানুষকেও সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শপিং মল, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘শহরে মোট ১০৮টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। অকেজো সিসি ক্যামেরাগুলির বেশিরভাগই মেরামত করা হয়েছে। বাকি যা আছে দুর্গা পুজোর আগে মেরামত করে ফেলা হবে।’’ গোবরডাঙার মহিলারা মনে করছেন, সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরে তাঁরা অনেকাংশেই নিরাপদে যাতায়াত করতে পারতেন।
সম্প্রতি রাতে এক মহিলা বাড়ি যাবেন বলে ভ্যানে উঠেছিলেন। ভ্যান চলার পরে তিনি বুঝতে পারেন ভ্যান চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। ভ্যানটির চালক ঠিকমতো চালাতে পারছিলেন না। এই মহিলা নেশাগ্রস্ত ভ্যান চালককে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
গোবরডাঙার বিজেপি নেতা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহরের বেশিরভাগ সিসি ক্যামেরাই খারাপ হয়ে পড়ে আছে। রাত ১০টার পরে নেশাড়ুদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। স্টেশন চত্বরে মদ, গাঁজা হেরোইনের ঠেক বসে। রাতে এখানে মহিলারা সুরক্ষিত নন।’’
নাট্যকর্মী দেবযানী গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমার নিজের একটি মেয়ে আছে। রাতে যাতায়াত করতে ভয় লাগে। আর জি করের ঘটনার পরে তো আতঙ্ক আরও বেড়েছে। আমার আবেদন, অকেজো সিসি ক্যামেরাগুলি দ্রুত মেরামত করা হোক।’’ গোবরডাঙার প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের বাপি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শহরের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে সব ক্যামেরা বসানো হয়েছিল তার বেশিরভাগ অকেজো। সাইকেল বাইক চুরি, ছিনতাই বা মহিলাদের উপরে হওয়া অপরাধ বন্ধ করতে সিসি ক্যামেরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যামেরা অকেজো থাকায় ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে।’’
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, নিয়মিত শহরে টহল দেওয়া হয় ও অনৈতিক কাজকর্ম হলে ধরপাকড় করা হয়।