ডায়ালিসিস মেশিনে চলছে চিকিৎসা। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরেই সাতটি নতুন ডায়ালিসিস মেশিন বরাদ্দ হল বসিরহাট জেলা হাসপাতালের জন্য। খারাপ হয়ে পড়ে থাকা দুটি মেশিন সারানোও হয় বৃহস্পতিবার। কাজ খতিয়ে দেখতে হাজির ছিলেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন বিধায়ক রোগীর বিছানা জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। পুরনো বেড সরিয়ে সেখানে নতুন বেড আনা হয়। রোগী এবং তাঁদের পরিজনেদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে খোঁজখবর করেন সপ্তর্ষি।
কয়েক বছর আগে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পিপিপি মডেলে ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হয়েছে। ৫টি মেশিন, একজন চিকিৎসক, ২ জন টেকনিশিয়ান এবং একজন নার্স আছেন। একজনের ডায়ালিসিস করতে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। সপ্তাহে ২-৩ বার ডায়ালিসিস করতে হয় অনেককেই। বেসরকারি ভাবে ডায়ালিসিসের একটি সিটিংয়ের জন্য দু’আড়াই হাজার টাকা লাগে। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে অবশ্য বিনা খরচেই ডায়ালিসিস হয়। ফলে রোগীর চাপও প্রচুর।
প্রয়োজনের তুলনায় মেশিন কম থাকায় অনেককে বেড পাওয়ার জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। এ দিকে, দু’টি মেশিন আবার খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি এ কথা জানতে পারেন বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে এলে সেখানে বিষয়টি তুলে ধরেন সপ্তর্ষি। সব শুনে দ্রুত খারাপ মেশিন সারানোর পাশাপাশি আরও ৭টি মেশিন দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।
এ দিন ডায়ালিসিস ইউনিটে পৌঁছে সপ্তর্ষি বলেন, ‘‘মাত্র ৩টি মেশিন দিয়ে বসিরহাট মহকুমার ৩০ লক্ষ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। মেশিনের অভাবে অনেক সময়ে অপেক্ষা করতে হয় রোগীদের। সব শুনে দিদি এখানে আরও ৭টি মেশিনের ব্যবস্থা করেছেন।’’ দ্রুত ওই ইউনিটে ১০টি বেডেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন সপ্তর্ষি। তিনি বলেন, ‘‘মেশিন চালাতে পাঁচশো লিটার পরিস্রুত জল লাগে। তা বাড়িয়ে ১ হাজার লিটার করা হবে। ১০ বেড চালুর হবে। এ জন্য স্বাস্থ্যসচিব নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিধায়ক।
হাসপাতালের সুপার কালীপদ পোদ্দার বলেন, ‘‘বিধায়কের চেষ্টায় হাসপাতালের উন্নতিতে আমাদের পক্ষে তাঁকে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে।’’
ডায়ালিসিস ইউনিটে ভর্তি থাকা গোবরডাঙার বাসিন্দা মৌমিতা সেন, সামসেরনগরের বাসিন্দা উষারানি মণ্ডল, বাদুড়িয়ার বাসিন্দা গিয়াসুদ্দিন মণ্ডলরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
ডায়ালিসিস ইউনিটের বাইরে দ্রুত বেড পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছু দালাল রোগীর কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে বলে কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন। সে কথা জানতে পেরে সপ্তর্ষি বলেন, ‘‘এমন ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য। কেউ যদি ডায়ালিসিস ইউনিটে ভর্তির জন্য টাকা চায়, তা আমাকে জানান। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’