পথে: হাসপাতালের দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন গোবরডাঙাবাসী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এক বৃদ্ধা হাঁটছেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, আমাদের হাসপাতাল ফিরিয়ে দাও।’
রবিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতাল ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে গোবরডাঙা কালীবাড়ি মোড় থেকে রাস্তায় হাঁটলেন কয়েক হাজার মানুষ। এই মিছিলে তৃণমূল নেতৃত্বের প্রথম সারির কোনও নেতানেত্রীকে দেখা না গেলেও মিছিলের সিংহভাগ অংশে হাঁটতে দেখা গিয়েছে শাসকদলের কর্মী সমর্থকদেরই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের মিছিলের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু তাঁরা সামনে আসেননি। যদিও গোবরডাঙার পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘আজকের মিছিলের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এলাকার সাধারণ মানুষ ওই মিছিল করেছেন।’’ পুরপ্রধান ওই দাবি করলেও এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এ দিনের মিছিল ছিল শাসকদলেরই।
মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরপ্রধান সুভায় দত্তকে জানিয়ে দেন, গোবরডাঙা হাসপাতাল হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর থেকে হতাশায় ভুগছেন গোবরডাঙা এবং সংলগ্ন এলাকার মানুষ। এ দিন তাঁরা পথে নেমে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন।
এ দিন মিছিলে হাঁটা এক মহিলা বলেন, ‘‘বেঁচে থাকার তাগিদে মিছিলে এসেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় আমাদের কথা বিবেচনা করবেন।’’ মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে কয়েকজন প্রবীণ মানুষ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর গোবরডাঙা সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। সে কারণেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ দিনই সিপিএমের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রীতিলতা শিক্ষানিকেতন স্কুলে একটি নাগরিক কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এখানেও দলের পতাকা ব্যবহার করা হয়নি। ওই কনভেনশনে ‘গোবরডাঙা হাসপাতাল বাঁচাও কমিটি’ তৈরি করা হয়েছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের বাপি ভট্টাচার্যকে ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। সিপিএমের হাবরা জোনাল কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর নন্দী বলেন, ‘‘হাসপাতাল বাঁচাতে আমরা মানুষের মধ্যে কোনও বিভাজন চাই না। তাই দলীয় পতাকা ব্যবহার করা হয়নি। আমরা এলাকর সমস্ত ক্লাব ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিয়ে অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করতে চাইছি।’’ শনিবার সন্ধ্যায় গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শহরে মিছিল ও সভা করা হয়। রবিবার স্থানীয় গৈপুরের বাসিন্দারাও হাসপাতালের দাবিতে মিছিল করেছেন।