মৌমাছি প্রতিপালন। নিজস্ব চিত্র।
বছর খানেক আগে পরীক্ষামূলক ভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বন বিভাগ থেকে ৭২ জনকে মৌমাছি প্রতিপালন ও মধু উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৬৬ জন মৌমাছি প্রতিপালন শুরু করেন। তাঁদের উৎপাদিত মধু পরিশোধিত করে ‘বনফুল’ নাম দিয়ে বাজারজাত করে বন দফতর। বিভিন্ন সরকারি বিপণন কেন্দ্র, জনপ্রিয় শপিংমল ছাড়াও ই-কমার্সে বিক্রি শুরু হয় বনফুলের। বনদফতর সূত্রের খবর, মাস পাঁচেকের মধ্যে সমস্ত মধু বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এখনও প্রচুর চাহিদা রয়েছে এই মধুর। তাই দ্বিতীয় দফায় আরও বেশি করে মানুষকে নিয়ে এই কাজ করতে চাইছে বন দফতর।
সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে ও মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে একের পর এক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বহু মৎস্যজীবী ও মধু সংগ্রহকারীদের। এই পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে মৎস্যজীবী ও জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহকারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জঙ্গল নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে বন দফতর। সেই লক্ষ্যেই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে মৌমাছি প্রতিপালন করে মধু সংগ্রহের ব্যবস্থা করে বনদফতর। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ থেকে শুরু করে সরকারি সব নিয়ম মেনে পাঁচ মাস আগে বাজারে আসে বনফুল। তারপর থেকেই তার চাহিদা তুঙ্গে। কয়েক মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে প্রথম দফায় উৎপাদিত প্রায় ৩৯ কুইন্ট্যাল মধু। এখনও প্রচুর চাহিদা রয়েছে মানুষের। জেলার মুখ্য বন আধিকারিক মৃণালকান্তি মণ্ডল বলেন, “পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম বার যা মধু উৎপাদন হয়েছিল সবই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এ বার আরও বেশি মানুষকে এই মৌমাছি প্রতিপালনের কাজে লাগানো হচ্ছে। আরও বেশি করে মধু উৎপাদনের চেষ্টা চলছে।” তিনি জানান, এ বছর ঝড়খালি ও কুলতলিতে এই মৌমাছি প্রতিপালন হয়েছে। আগামী মরসুমে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে আরও বেশি করে মৌমাছি চাষের পরিকল্পনা রয়েছে। এই পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করে প্রথমবারেই লাভের মুখ দেখেছেন ঝড়খালির বাসিন্দা প্রণব সর্দার, নিরঞ্জন মণ্ডলরা। প্রণব বলেন, “এ ভাবে মধু সংগ্রহ করে লাভ হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে আর জঙ্গলে যেতে চাই না। বন দফতরকে ধন্যবাদ আমাদের এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।”