প্রতীকী ছবি।
অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় পণের দাবিতে তাঁর উপরে অকথ্য শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, মারধরের জেরেই বিয়ের দেড় বছরের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে নৈহাটির শিবদাসপুর থানার মামুদপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম পূজা হালদার (২৩)। পূজার পরিজনেরা ইতিমধ্যেই তাঁর স্বামী, শাশুড়ি-সহ শ্বশুরবাড়ির সকলের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে, অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।’’
পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে মামুদপুরের বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে পূজার বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পরেই পণের দাবিতে তাঁর উপরে অত্যাচার শুরু হয়। পূজার মা-বাবার তরফে বেশ কয়েক বার টাকা দেওয়াও হয়। কিন্তু আরও টাকা চাওয়া হতে থাকে। বাড়তে থাকে অত্যাচারের মাত্রাও। পূজার এক আত্মীয়া উমা সিংহরায় বলেন, ‘‘পূজা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ওর স্বামী পণের টাকা না পাওয়ায় ওই অবস্থাতেও ওর পেটে লাথি মারে। তাতে পূজা গুরুতর জখম হয়। কিন্তু ওরা ওর কোনও চিকিৎসা করায়নি। তাই পূজা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে আসে। আমরা ওকে নৈহাটি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই চিকিৎসার পরে কিছুটা সুস্থ হয় পূজা।’’ ওই আত্মীয়া আরও বলেন, ‘‘কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই পূজা ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় লাথি মারার জেরেই ও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ওকে রক্তও দিতে হয়েছিল। নৈহাটি হাসপাতালে ফের ভর্তি করার পরেও ওর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন আমরা ওকে কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই পূজার মৃত্যু হয়। দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
খবর শোনার পরেই মৃতার মা-বাবার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে আসেন মামুদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হারান ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘অসহায় এই পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে বলেছি।’’