ত্রিপল খাটিয়ে চলছে রান্না। নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে পাকা ঘর ছিল। এখন কয়েকটা ইটের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। রান্নার কাজ হয় খোলা আকাশের নীচে। এই অবস্থার মধ্যে চলছে সন্দেশখালি ১ ব্লকের শেয়ারা রাধানগর পঞ্চায়েতের পূর্ব রাধানগর শেখপাড়ার ৭০ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র।
স্থানীয় সূত্রের খবর, আগে এখানে টিনের ছাউনি দেওয়া পাকা ঘর ছিল। ২০০৯ সালের আয়লায় পাশের ডাঁসা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় এলাকা। কেন্দ্রের টিনের চাল উড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘর। পাকা দেওয়াল হেলে পড়ে। সংস্কার না হওয়ায় ধীরে ধীরে ঘরের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে থাকে। তারপর থেকে ঘরের ভিতরে আর ক্লাস করা হয় না। বর্তমানে ওই জায়গায় এখন স্থানীয় এক বাসিন্দার দেওয়া ত্রিপল ঝুলিয়ে রান্না হয়। ঝড়-বৃষ্টি হলে বার বার উনুন নিভে যায়। ধুলো-বালি, শুকনো পাতা উড়ে আসে।
কেন্দ্রের কর্মী সীমা হাউলি রপ্তান জানান, ২০২০ সালে এখানে এসে দেখেন, ঘর বলতে রয়েছে হেলে পড়া দু’টো ভাঙাচোরা দেওয়াল। বাচ্চাদের সুরক্ষার কথা ভেবে পরে তা ভেঙে ফেলা হয়। সেই ইট আশপাশে রাখা আছে। ঘরের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। কেন্দ্রটি চলছে রাধানগর এফপি স্কুল চত্বরে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চাল ডাল রাখা হয় স্কুলের মালপত্র রাখার ঘরেই। সীমার কথায়, ‘‘এই কেন্দ্রে এখন ৩৫ জন বাচ্চা আছে। প্রথম দিকে বাচ্চাদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে পড়াতাম। তবে রোদ-বৃষ্টিতে ফাঁকা জায়গায় বাচ্চাদের বসানো খুবই সমস্যার। তাই এখন আর পড়াশোনা হয় না। বাচ্চারা মায়ের সঙ্গে এসে খাবার নিয়ে চলে যায়।’’
স্থানীয় অভিভাবক রাজ্জাক শেখ, সত্যজিৎ বীর বলেন, “ফাঁকা জায়গায় এ ভাবে বাচ্চাদের কী পড়াশোনা হয়? একটা ঘর থাকলে পড়তে পাঠাতাম।”
এ বিষয়ে সন্দেশখালি ১ ব্লকের ভারপ্রাপ্ত সিডিপিও শুভ্রদীপ বৈদ্যকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি। সন্দেশখালি ১ বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রটি পাশের প্রাথমিক স্কুলে চালানো যায় কি না, তা ভাবা হচ্ছে। এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে শীঘ্রই।”